বাংলাদেশে থেকে গতমাসে বিদেশে গেছে ১২ লাখেরও বেশি কর্মী । এটা একটা রেকর্ড। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিদেশে গেছে প্রায় ১২ লাখ ৪৯ হাজার জন কর্মী। গতবছর গিয়েছিল প্রায় ১১ লাখ ৩৬ হাজার জন। সেই হিসেবে এ বছর এক লাখ ১৩ হাজার জন বেশি কর্মী বিদেশে গেছেন।
কর্মী যাওয়া বাড়ছে, কিন্তু রেমিটেন্স কমছে। বিষয়টি উদ্বেগজনক। বিভিন্ন সময় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে এই উদ্বেগ প্রকাশ পেয়েছে। প্রবাসী আয় কমার কারণ কী সেটা জানার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।
দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস হচ্ছে রেমিটেন্স। কোনো কারণে প্রবাসী আয় কমলে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে রিজার্ভের ওপর। কোনো একক কারণে প্রবাসী আয় কমছে না। এর পেছনে রয়েছে নানাবিধ কারণ। এ নিয়ে সুনির্দিষ্ট গবেষণা হওয়া দরকার। তবে গণমাধ্যমে যেসব খবার প্রকাশিত হয় তা থেকে ধারণা করা যায় যে, প্রত্যাশা অনুযায়ী প্রবাসী আয় না বাড়ার অন্যতম বড় একটি কারণ হচ্ছে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত শ্রমিকের অভাব।
অনেকদিন ধরে দেশের শ্রমবাজারকে আন্তর্জাতিকবাজারে বড় করার কথা বলা হচ্ছে। অনেক শ্রমিক বিদেশে যাচ্ছেও। তবে তাদের অনেককেই কাজ না থাকা সত্ত্বেও বিদেশে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ আছে। আবার যারা কাজ পায় তাদের থাকে প্রশিক্ষণ ও দক্ষতার অভাব। দেশে দক্ষ শ্রমশক্তির অভাব রয়েছে। যে কারণে দক্ষ শ্রমশক্তি নির্ভর বাজার ধরতে বেগ পেতে হচ্ছে।
অদক্ষ জনশক্তি বিদেশে পাঠানোর পরিবর্তে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানিতে মনোযোগী হতে হবে। এজন্য মেধা ও জ্ঞানভিত্তিক দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা জরুরি। শুধুমাত্র কারিগরি শিক্ষা দিয়ে বিদেশের বাজারে প্রবেশ করা যাবে না। উন্নত বিশ্বের চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ শ্রমিক গড়ে তুলতে হবে। বিদেশে শ্রমিক পাঠাতে হবে প্রশিক্ষণ দিয়ে। সংশ্লিষ্ট দেশের ভাষা ও সংস্কৃতি, আইন প্রভৃতি সম্পর্কে ধারণা দেয়াও জরুরি। প্রশিক্ষণের নামে যেনতেনভাবে কোনো কার্যক্রম চালালে অবস্থার উত্তরণ হবে না।