বাজারে নতুন আলু এসেছে। এই সময় সাধারণত আলুর দাম কমে। কিন্তু এবার দাম কমেনি, উল্টো বেড়েছে। খুচরা বাজারে আলুর দর কেজি প্রতি ৮০ টাকা। পাইকারি দর কোথাও কোথাও প্রতি কেজি ৪৫ টাকা।
শুধু আলুর দামই নয়, মৌসুমি অনেক সবজির দামই বেড়েছে। শীতের মৌসুমের আগে সবজির দাম কমছিল। ভোক্তা সাধারণ আশা করেছিল, শীতে এই দাম আরও কমবে। বাস্তবে সবজির বাজার ভোক্তাদের প্রত্যাশার বিপরীত আচরণ করছে।
দীর্ঘদিন ধরেই বাজার ভোক্তার প্রত্যাশামতো আচরণ করছে না। বাজার কেন সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা বা ধারণামতো চলছে না সেটা একটা প্রশ্ন। মুক্তবাজার ব্যবস্থায় চাহিদা-জোগানের ভিত্তিতে পণ্যের দর নির্ধারণ হয়। প্রশ্ন হচ্ছে, বাজারে কি আলু বা অন্যান্য সবজির চাহিদা বেড়ে গেছে নাকি এর জোগানে ভাটা পড়েছে। কোনো কারণে যদি আলুর জোগানে ঘাটতি তৈরি হয়ও তাহলেও কি এর দর কেজিপ্রতি ৮০ টাকা হতে পারে- এমন প্রশ্ন করছেন অনেকেই।
কৃষক কত দরে আলু বিক্রি করছেন আর ভোক্তা কত দরে আলু কিনছেন সেটা জানতে হবে। কৃষক যদি আলুর দাম বেশি পান, লাভের মুখ দেখেন তবে সেটা ভালো খবর। লাভবান না হলে চাষাবাদে কৃষক আগ্রহ হারাতে পারেন। কৃষক যে দরে আলু বিক্রি করছেন তার সঙ্গে ভোক্তার ক্রয়মূল্যের ব্যবধান কত সেটা একটা প্রশ্ন। ভোক্তা কারও অতি মুনাফার শিকার হচ্ছে কিনা সেটা জানা জরুরি।
দেশের বাজার ব্যবস্থাপনা নানা দুর্বলতা রয়েছে। যে কারণে অনেক পণ্যেই এই দুর্বলতার ছাপ পড়ে। দেশে পণ্যের দাম চাহিদা-জোগানের কারণে কতটা আর বাজার ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতার কারণে কতটা প্রভাবিত হয় সেটা জানা জরুরি।
দেশে একটি সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে। বাজার গবেষণার ভিত্তিতে সুপরিকল্পতিভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে। উৎপাদন ও চাহিদা সম্পর্কে বাস্তব ধারণা থাকা জরুরি। আমদানিতে ভারসাম্য বজায় রাখা দরকার। উৎপাদন খরচ কমানো যায় কীভাবে সেটা ভেবে দেখতে হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর বাজার নিয়ন্ত্রণে সক্ষমতা ও দক্ষতার বিকল্প নেই। সংশ্লিষ্ট সবাই যদি সম্মিলিতভাবে প্রয়াস চালায় তাহলে নিত্যপণ্যের দামে স্বস্তি আনা যাবে বলে আমরা বিশ্বাস করতে চাই।