গত মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের তিনটি বগিতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় মা ও শিশুসন্তানসহ চারজন মারা গেছে।
রেলপথমন্ত্রী বলেছেন, নাশকতার মধ্য দিয়ে নিরাপদ রেলযাত্রাকে অস্থিতিশীল করা হচ্ছে। বিএনপি-জামায়াত ২০১৩-১৪ সালেও একই ঘটনা ঘটিয়েছে। আগে বাসে, ট্রাকে আগুন দিত, এখন রেলকেই প্রধান আক্রমণের হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে তারা।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিশেষ মহলের প্রশ্রয় ছাড়া ট্রেনে আগুন দেয়ার মতো কাজ সম্ভব না। চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলন থেকে জনদৃষ্টিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে এটি কূটচাল কিনা তা নিয়ে জনগণের মধ্যে গভীর সংশয় দেখা দিয়েছে। এটি সুপরিকল্পিত নাশকতার ঘটনা।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, তিনজন ব্যক্তি বিমানবন্দর স্টেশন থেকে ট্রেনের তিনটি বগিতে উঠেছিল। তারা পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিতে পারে। বিমানবন্দর স্টেশনের সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হচ্ছে। কারা সেখান থেকে ট্রেনে উঠেছিল এবং তেজগাঁও স্টেশনে কারা নেমেছে তা জানার চেষ্টা চলছে। তদন্ত শেষ হলে স্পষ্ট ধারণা মিলবে।
ট্রেনে আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ানো ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করা সুস্থ রাজনীতির লক্ষণ নয়। কোনো রাজনৈতিক শক্তির স্বীয় আকাক্সক্ষা পূরণের জন্য মানুষ বলি হবে; সেটা মেনে নেয়া যায় না কোনোভাবেই। মানুষ মেরে ও রাষ্ট্রের সম্পদ ধ্বংস করে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করার অপসংস্কৃতি ত্যাগ করতে হবে। যে বা যারাই এসব মানুষ হত্যার সঙ্গে যুক্ত আছে, তারা এসব নাশকতামূলক কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকবে এবং তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে- এটা আমরা আশা করব।
যারা নাশকতা ঘটিয়েছে তাদের আটক করে আইনের হাতে সোপর্দ করতে হবে। এ নাশকতার সঙ্গে যে বা যারাই জড়িত থাকুক, তাদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া জরুরি। তদন্তের নামে কাউকে যেনে হয়রানি করা না হয় সেটাও দেখতে হবে। মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের মাধ্যমে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার বিকল্প নেই। যেহেতু সিসিটিভি ফুটেজ আছে সেহেতু অপরাধী শনাক্ত করার কাজ অনেকটাই সহজ হবে বলে আশা করা যায়। নাগরিকদের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি যারা করেছে, তারা যেন কোনোভাবেই পার পেয়ে না যায়। মানুষের জীবনের চেয়ে ক্ষমতা মূল্যবান নয়। লাশ নিয়ে রাজনীতি যে কোনো মূল্যে বন্ধ করতে হবে।