কুমিল্লা প্রতিনিধি : জেলার লালমাই পাহাড়ের বুকে বিভিন্ন শাক-সবজি, ফল-মূল উৎপাদন হয়ে আসছে। লালমাই পাহাড়ের আদি অধিবাসীদের একমাত্র প্রধান পেশা হলো কচু চাষ করা। চলতি বছরে লালমাই পাহাড়ে কচুর বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছে কৃষকরা।
একজন চাষি আগ থেকে বলতে পারেন কোন বছর তাদের বাম্পার ফলন হবে। যে বছর বৃষ্টি বেশী হবে, সেই বছর কচুর চড়ার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা থাকে। চারা বপনের সময় এ কচুর ছড়া প্রতি বছরে একবার হয়ে থাকে। প্রথমে কৃষকরা পাহাড় কোঁদাল দিয়ে মাটি কেটে বীজ বপনের জন্য প্রস্তুত করে। মাটি কাটা শেষ হলে বীজ বপনের কাজ শুরু হয়। বীজ রোপণ করতে হয় এক হাতের মধ্যে তিনটি।
প্রতি শতকে ছড়া উৎপাদনে খরচ হয় ৮০০-১০০০ টাকা। আর তা বিক্রি করা হয় ১২০০-১৫০০ টাকা। শতকে উৎপাদন হয়ে থাকে ৩-৪ মণ। কৃষকরা এ পেশার অর্থ উপার্জন দিয়ে সংসার, ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া করে থাকেন।
সদর দক্ষিণ উপজেলা কৃষি অফিসারের তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, চলতি বছর প্রায় ৪৫ হেক্টর জমিতে কচুর চড়া উৎপাদন করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে প্রতি হেক্টর জমিতে কচুর ছড়া উৎপাদন হবে ২০ টন। ৪৫ হেক্টর জমিতে উৎপাদন হবে প্রায় ৯০০ টন। এক সময় এ লালমাই পাহাড়ের কচুর ছড়া দেশের সকল জেলার চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করে উপার্জন করা হতো বৈদাশিক মুদ্রা।
লালমাই পাহাড়ের কৃষক নজরুল ইসলাম বাসসকে জানান, পাহাড়ে পানি সেচ দেওয়ার কোন ব্যবস্থা না থাকার কারণে বৃষ্টির উপর আমাদের ফসলের জন্য নির্ভর হয়ে থাকতে হয়। যেহেতু এ বছর আগাম বৃষ্টি হয়েছে তাই আমরা বেশী ফলনের আশা করতে পারি। অপর কৃষক আমির হোসেন জানান, আবহাওয়া শেষ পর্যন্ত যদি অনুকূলে থাকে তাহলে এবার বাম্পার ফলন হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আইউব মাহমুদ বলেন, আমরা পাহাড়ের অধিবাসী কৃষকদের সকল ধরনের পরামর্শ দিয়ে থাকি। যাতে করে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও পাহাড়ে কচুর চড়া চাষে বিপ্লব ঘটবে।