নিজস্ব প্রতিবেদক: গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, ভারতীয় তাবেদাররা সাজানো-পাতানো ডামি নির্বাচন করে দেশে বাকশাল কায়েম করে ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছে। কাজেই আজকে বাম-ডান, দল-মত নির্বিশেষে ১৯৭১ সালের মতো ঐক্যবদ্ধ হওয়া এখন সময়ের দাবি। ভারতীয় আধিপত্যবাদ থেকে বাংলাদেশ ও দেশের মানুষকে মুক্ত করার জন্য আমাদের লড়াই করতে হবে। আমরা জানি না আমাদের এই লড়াইয়ের পরিণতি কি হবে। কিন্তু অস্তিত্ব রক্ষার জন্য আমাদের এই লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, এই সরকার যদি তার ভুল বুঝতে পেরে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য জাতীয় ঐক্য, সংহতির পথে হাঁটে আমরাও তাদের সঙ্গে কাজ করব। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আগামীর রাষ্ট্র গঠন করব। কিন্তু তার জন্য এই ডামি সংসদ ভেঙে দিতে হবে, রাজনৈতিক ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে। তাহলে এই সরকারের সঙ্গে আমাদের ঐক্য হবে, জনগণ তাদের ক্ষমা করবে।
শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক গণবিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশের আয়োজন করে গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর শাখা।
সমাবেশে নুরুল হক নুর বলেন, আমরা ভারতীয় তাঁবেদার এই বাকশালী সরকারের অত্যাচার নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বলে যাব। আমরা গণতন্ত্রের জন্য কথা বলে যাব। আমরা মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের মতো ভারত হটাও আন্দোলন করব।
তিনি আরও বলেন, কিছুদিন আগে এই সরকারের পররাষ্ট্রসচিব বলেছেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন নিয়োগ এবং প্রার্থিতায় ভারতের হস্তক্ষেপ থাকে। এতদিন আমরা শুনেছি, বিভিন্ন মানুষ বলে, বাংলাদেশের পুলিশ প্রধান, বিডিআর প্রধান, সেনাবাহিনীর প্রধান কে হবে- সেটি নিয়ে নাকি ভারতের সুপারিশ থাকে। ভারত যদি কারো বিরুদ্ধে আপত্তি দেয়, তাহলে সে নিয়োগ পায় না। এটা শেখ হাসিনাও পরিষ্কার করেছিল ভারত সফর করে।
সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, নিজেদের অমরত্ব লাভের জন্য দেশকে ধ্বংস করবেন না। একটি স্বাধীন দেশকে সিকিম বানাবেন না।
আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রী, ছাত্রলীগ-যুবলীগের তরুণদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী রাখতে গিয়ে পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রকে ধ্বংস করবেন না। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে বিকিয়ে দেবেন না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা আপনার নিরাপত্তা দিব, আপনি জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিন। আমরা আপনার পাশে থাকব, আপনি আমাদের সঙ্গে ভারত খেদাও আন্দোলন শুরু করুন। দেশের যা ক্ষতি করেছেন করেছেন, দয়া করে আর ক্ষতি করবেন না। দয়া করে এই সংসদে বা পরবর্তী সংসদের নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে রাজনৈতিক ঐক্য তৈরি করুন। বিল পাস করে নির্বাচন দিয়ে বিদায় নিন। নইলে আপনাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। আপনাদের অস্তিত্ব সংকটে পড়বে।
বর্তমান সরকারকে দুর্নীতি, গুম, খুনের রোল মডেল দাবি করে গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান বলেন, আজকে বাংলাদেশকে তারা (সরকার) দারিদ্রের যাতাকলে পিষ্ট করছে। তারা কিছু মেট্রোরেল, কালভার্ট, পদ্মাসেতু করেছে। আর সেগুলো দেখিয়ে বলছে, আমরা ব্যাপক উন্নয়ন করেছি।
গণঅধিকার পরিষদের ঢাকা মহানগরের সভাপতি অ্যাড. নাজিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে গণবিক্ষোভ সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমান, গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মঞ্জুর মোর্শেদ মামুন, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, যুব অধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি নূর হোসেন, গণঅধিকার পরিষদের সহ-গণমাধ্যম বিষয়ক সম্পাদক শাকিল আহমেদ, গণঅধিকার পরিষদের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ইউনূস গাজী, গণঅধিকার পরিষদের ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ, শ্রমিক অধিকার পরিষদের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মাহবুবুর রহমান শিপনসহ অন্যান্যরা।