অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : চলতি অর্থবছরে প্রথমবারের মতো একক মাসে রপ্তানি আয় পাঁচ বিলিয়ন ডলারের অতিক্রম করেছে। তবে খ্রিষ্টীয় বছরের শুরুতে তা খুব একটা সুসংবাদ হয়ে থাকেনি; কেননা সদ্য সমাপ্ত ডিসেম্বরে আগের অর্থবছরের একই মাসের তুলনায় রপ্তানি কমেছে ১ দশমিক ০৬ শতাংশ।
আজ মঙ্লবার (২ জানুয়ারি) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত হালনাগাদ রপ্তানির তথ্যে দেখা যায়, ডিসেম্বরে পণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৫৩০ কোটি ৮০ লাখ ডলার। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে রপ্তানি হয়েছিল ৫৩৬ কোটি ৫১ লাখ ডলারের পণ্য।
চলতি অর্থবছরের অক্টোবরের পর থেকে দেশের রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক ধারার রয়েছে। টানা তিন মাস আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে কমে যাওয়ায় অর্থবছরের প্রথমার্ধের মোট প্রবৃদ্ধি শূন্যের কোটায় নেমেছে।
জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাস শেষে মোট রপ্তানি আয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার। আগের অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের ২৭ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে তা শূন্য দশমিক ৮৪ শতাংশ এগিয়ে।
চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে মোট ৬২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছিল বাংলাদেশ। লক্ষ্য পূরণে ডিসেম্বরের মধ্যে ৩০ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করতে হতো। সেই হিসাবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অর্জন এখনও ৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ পিছিয়ে আছে।
চলতি অর্থবছরের জুলাইতে ৪৫৯ কোটি ২০ লাখ ডলারের রপ্তানি শেষে প্রবৃদ্ধি ১৫ দশমিক ২৬ শতাংশ, অগাস্টে ৪৭৮ কোটি ২১ লাখ ডলার (প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৮০ শতাংশ), সেপ্টেম্বরে ৪৩১ কোটি ডলার (প্রবৃদ্ধি ১০ দশমিক ৩৭ শতাংশ), অক্টোবরে ৩৭৬ কোটি ২০ লাখ ডলার (আয় কমে ১৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ), নভেম্বরে ৪৭৮ কোটি ৪৮ লাখ ডলার (আয় কমে ৬ দশমিক ০৫ শতাংশ) আয় আসে পণ্য রপ্তানি থেকে।
এ পরিসংখ্যানের হিসাবে টাকার অংকে ডিসেম্বরে চলতি অর্থবছরের সবচেয়ে বেশি রপ্তানি আয় এসেছে। এরপরও তা ছিল আগের বছরের চেয়ে কম। সব মিলিয়ে শেষ তিন মাসে আয় কমে যাওয়ায় অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে আয়ে খুব বেশি প্রবৃদ্ধি হয়নি।
ছয় মাসের খাতভিত্তিক তথ্যে দেখা যায়, রপ্তানির সবচেয়ে বড় খাত তৈরি পোশাক শিল্প থেকে আয় হয়েছে ২৩ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলার। এখানে প্রবৃদ্ধি মাত্র ১ দশমিক ৭২ শতাংশ।
চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য থেকে ৫২৩ মিলিয়ন ডলার আয় হলেও তা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ পিছিয়ে গেছে। পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৪৩৬ মিলিয়ন ডলার, এখানেও পিছিয়ে পড়েছে ১০ দশমিক ২৪ শতাংশ। অন্য পণ্যের মধ্য জ্যান্ত ও হিমায়িত মাছ রপ্তানি করে ৭৩০ মিলিয়ন ডলার এবং কৃষিপণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৫০৭ মিলিয়ন ডলার।