নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। চলতি বছরে নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠদান চলছে তিনটি শ্রেণিতে। আগামী বছর আরও চারটি শ্রেণিতে চালু হবে এই শিক্ষাক্রম। পরবর্তী বছরগুলোতে অন্যান্য শ্রেণিতেও এই শিক্ষাক্রম চালু করার কথা রয়েছে। নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠদান প্রক্রিয়ায় এসেছে আমূল পরিবর্তন। আগের মতো কেবল শিখন-শেখানো কার্যক্রমের মধ্যে প্রক্রিয়াটি সীমিত নয়।
এই শিক্ষা পদ্ধতি বেশির ভাগ শিক্ষকের কাছে নতুন হওয়ায় তাদের কাছেও বিষয়টি অনুধাবন করা সময়সাপেক্ষ ও জটিল মনে হচ্ছে। এ শিক্ষাক্রম বোঝা ও পাঠদানের জন্য শিক্ষকরা প্রশিক্ষণ পেয়েছেন মাত্র পাঁচ দিন। অনেকে এই প্রশিক্ষণও পাননি।
চলতি বছর থেকে দেশে চালু হওয়া নতুন শিক্ষাক্রম বাতিলসহ একাধিক দাবিতে মাঠে নেমেছেন অভিভাবকদের একটি অংশ। এ দাবি বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে বেশকিছু কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়েছে। এ কর্মসূচির অংশ বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের সামনের সড়কে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। তাদের এ আন্দোলনের সংহতি জানিয়েছেন শিক্ষকরাও। সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলনের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সারাদেশে স্কুলে স্কুলে একই কর্মসূচি পালিত হবে বলে জানা গেছে।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া অভিভাবকরা বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা নেই। চতুর্থ থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়তে হবে আটটি বিষয়। নতুন শিক্ষাক্রমে তাত্ত্বিক বিষয়ের চেয়ে শিখনকালীন মূল্যায়নকে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। তুলে দেয়া হয়েছে সাময়িক পরীক্ষাও। পরীক্ষা পদ্ধতি না থাকায় ছাত্রছাত্রীরা অধ্যয়নমুখী হচ্ছে না। বইয়ের সাথে দূরত্ব বাড়ায় তারা ডিভাইসমুখী হচ্ছে।
তারা বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমে সবচেয়ে বড় সমস্যা দলগত কার্যক্রমে। দেখা যাচ্ছে স্কুল থেকে প্রদত্ত দলগত কাজটি করতে হচ্ছে স্কুল পিরিয়ডের পর। যে কারণে ছাত্রছাত্রীদেরকে বন্ধু বান্ধবীর বাসায় বা অন্য কোথাও একত্রিত হয়ে তা সম্পন্ন করতে হচ্ছে। এতে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে ছাত্রছাত্রী অভিভাবক উভয়কেই। অধিকাংশ অভিভাবক স্কুল ছুটির পর তার সন্তানকে অন্য কারো বাসায় নিয়ে যেতে আগ্রহী নয় এবং স্বাচ্ছন্দবোধ করেন না।
বর্তমান শিক্ষাক্রমে শিখনকালীন কাজের অংশ হিসেবে বিভিন্ন প্রোজেক্ট বাস্তবায়নের জন্য ছাত্রছাত্রীদেরকে গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকতে হচ্ছে, যার ফলে তারা সম্মুখীন হচ্ছে নানা ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যার। অপরদিকে প্রোজেক্টগুলির ইকুইপমেন্ট যতন্ত্র না পাওয়া, সেই সাথে চড়া দামের কারণে এগুলি কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন অভিভাবকরা।’