ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা পৃথক দুই মামলায় দীর্ঘ প্রায় ১৫ মাস পর জামিনের পর কারামুক্ত হলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা। সোমবার (২০ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে তিনি কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে মুক্তি পান।
কাশিমপুর মহিলা কারাগারের ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র সুপার মো. শাহজাহান মিয়া জানান, খাদিজার জামিনের আদেশ গত রোববার সন্ধ্যার দিকে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছায়। জামিনের কাগজপত্র কারাগারে আসার পর তা যাচাই-বাছাই করা হয়। সকালে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। এর আগে, গত বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রাখেন।
বিচারিক আদালতে একাধিকবার খাদিজার জামিন আবেদন নাকচ হয়। এরপরে তিনি হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন। গত ১৬ ফেব্রæয়ারি তাকে জামিন দেন হাইকোর্ট। পরে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে গত ১০ জুলাই আপিল বিভাগ ওই আদেশ চার মাসের জন্য মুলতবি রাখেন। খাদিজা রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। অনলাইনে সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রচারসহ দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণেœর অভিযোগে ২০২২ সালের অক্টোবরে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পৃথক দুটি মামলা হয়।
একটি মামলার বাদী নিউমার্কেট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খাইরুল ইসলাম এবং অন্যটির বাদী কলাবাগান থানার উপপরিদর্শ আরিফ হোসেন। খাদিজার জাতীয় পরিচয়পত্র ও একাডেমিক কাগজপত্রে বয়স ১৭ বছর কিন্তু তাকে প্রাপ্তবয়স্ক দেখিয়ে ২০২০ সালের ১১ ও ১৯ অক্টোবর কলাবাগান ও নিউমার্কেট থানায় পুলিশ দুটি মামলা করে। এর দুই বছর পর মামলার অভিযোগপত্র তৈরি হলে ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট মিরপুরের বাসা থেকে খাদিজাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
এজাহারে বলা হয়েছে, বাদী ২০২০ সালের ১১ অক্টোবর মেজর (অব.) দেলোয়ার হোসেনের ইউটিউব চ্যানেলে ‘হিউম্যানিটি ফর বাংলাদেশ’ শিরোনামে এক ভিডিও দেখতে পান। সেখানে সঞ্চালক খাদিজাতুল কুবরার উপস্থাপনায় অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ার হোসেন তার বক্তব্যে বাংলাদেশ বৈধ গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাতের বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করেন। এতে আরও দেখা যায়, সঞ্চালক খাদিজাতুল কুবরা ও মেজর দেলোয়ার তাদের ইউটিউব চ্যানেল এবং ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজগুলোতে উল্লিখিত ভিডিওগুলো আপলোড করে বাংলাদেশে চলমান স্থিতিশীল পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।