নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্যাংকের টাকা নিয়ে যাঁরা ফেরত দেননি, তাঁদের ছাড় দেওয়া হবে না। টাকা উদ্ধারে আইনগত যত পন্থা আছে, সবই অনুসরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
বুধবার (২১ আগস্ট) এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
গভর্নর বলেন, যাঁরা ব্যাংকের টাকা নিয়ে ফেরত দেননি, তাঁদের ছাড় দেওয়া হবে না। টাকা উদ্ধারে আইনগত যত পন্থা আছে, সবই অনুসরণ করা হবে। দুর্বল ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হবে। ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ইসলামী ব্যাংকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। অন্য ব্যাংকগুলো নিয়েও একই সিদ্ধান্ত হবে।
যেসব ব্যাংকে পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হবে, সেসব ব্যাংক কারা চালাবে, এমন প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন, সরকার কোনো ব্যাংকের দায়িত্ব নেবে না। আপাতত স্বতন্ত্র পরিচালক দিয়ে ব্যাংকগুলো চলবে। এস আলম গ্রুপ ছাড়া অন্যদের হাতে ২ শতাংশের বেশি শেয়ার থাকলে পরে তাঁরা পর্ষদে আসতে পারবেন।
এস আলম গ্রুপের কাছে কত ঋণ আছে, জানতে চাইলে আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘নামে-বেনামে কত ঋণ আছে, তা জানা যায়নি। বেনামি ঋণের তথ্য এখনো আমাদের কাছে নেই। তবে এসব তথ্য বের হবে। এ জন্য কিছুটা সময় প্রয়োজন হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন ব্যাংকের ঋণ অনিয়মে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের দায় নিয়ে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকেরা। এর জবাবে গভর্নর বলেন, ‘এটা আমার আসার আগের ঘটনা। আগামী দিনে কোনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হোক, আমি চাই না। কারও যদি কোনো কথা থাকে, তাহলে আমার দরজা খোলা আছে। আমি শুনে যদি যৌক্তিক দাবি মনে হয়, তাহলে তা মানার চেষ্টা করব। কিন্তু অযৌক্তিক কোনো দাবি মানা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। দরকার হলে আমাকে পদত্যাগ করতে হবে। কিন্তু অযৌক্তিক দাবি মেনে কিছুতে স্বাক্ষর করব, সেটা আমার দ্বারা হবে না। ওই সাইনের সঙ্গে আমার পদত্যাগপত্রও একসঙ্গে যাবে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তাদের বিষয়ে গভর্নর বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করব না। তবে আমরা চেষ্টা করছি পুনর্গঠন করার জন্য, যাতে কোনো স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী একই পদে দীর্ঘদিন না থাকে।’
বিভিন্ন ব্যাংকের আর্থিক কেলেঙ্কারির বিষয়ে কবে নাগাদ ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চাইলে আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘এটা এক দিনের ব্যাপার নয়। আমি এসেই বড় রকমের নাড়াচাড়া দিতেও চাই না। কারণ, আমাদের হাতে অনেক কাজ।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলেন, ‘আমাদের এখন প্রধান কাজ হচ্ছে দেশের অর্থনীতিকে রক্ষা করা। বাংলাদেশ যেন খেলাপি না হয়, সে জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। দেশের বৈদেশিক লেনদেনের ক্ষেত্রে যাতে প্রশ্ন না ওঠে, আমরা যেন অবনমিত না হই, সহযোগী ব্যাংকগুলোর সঙ্গে যেন আমরা সম্পর্কের উন্নতি ঘটাতে পারি, এসব নিয়ে কাজ করতে হবে।’