নিজস্ব প্রতিবেদক: কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ‘আমি রাজাকার’ স্লোগান তোলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, যারা রাজাকার বলে স্লোগান দিচ্ছে তারা কি মুক্তিযুদ্ধের আসল ইতিহাস জানে? মুক্তিযুদ্ধের পাশবিকতা তারা দেখেনি। দুর্ভাগ্য তারা কি শিখলো? ইতিহাস জানেনা বলেই নিজেদের রাজাকার বলতে শিক্ষার্থীরা লজ্জা পাচ্ছে না।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভাবতে অবাক লাগে রোকেয়া হলের মেয়েরাও বলে তারা রাজাকার। তারা কী শিক্ষা পেলো! তারা কী জানে ২৫ মার্চ কী হয়েছিল! এসব তারা দেখেনি। তাই তারা রাজাকার পরিচয় দিতে গর্ববোধ করে।
সোমবার (১৫ জুলাই) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি সই অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সরকারপ্রধান।
২০১৮ সালে সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র হাইকোর্ট অবৈধ ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় শিক্ষার্থীরা দুই সপ্তাহ ধরে টানা আন্দোলন চালিয়ে আসছে। এর মধ্যে গতকাল রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দেন, সরকারি চাকরিতে কোটার বিষয়টি আদালতেই ফয়সালা করতে হবে।
বক্তব্যের এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কোটা আন্দোলন করার আগে তো তোদের রেজাল্টগুলো দেখা উচিত ছিল যে- কোথায় তারা দাঁড়িয়েছে! দ্বিতীয়টি হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি তাদের এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি পুতিরা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতি পুতিরা পাবে?
প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে ‘মর্মাহত’ হয়ে রোববার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষালয়ে আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ দেখান। এসব বিক্ষোভে স্লোগান দেওয়া হয়, ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার-রাজাকার’।
শিক্ষার্থীদের এমন স্লোগানে ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুঃখ লাগে যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের মেয়েরাও শুনি তারা ‘রাজাকার’ স্লোগান দিচ্ছে। তারা কী একাত্তরে এই হলের ইতিহাস জানে? শিক্ষার্থীরা কি জানে, কী পাশবিক নির্যাতন পাকিস্তানি হানাদাররা রোকেয়া হলেই করেছে! রাস্তায় রাস্তায় লাশ পড়ে থাকতো। এসব শিক্ষার্থীরা সেসব দেখেনি। কী শিক্ষা তারা নিলো? আসলে এসব জানে না বলেই শিক্ষার্থীরা নিজেদের রাজাকার বলতে লজ্জা পাচ্ছে না।