প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ:হবিগঞ্জে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে এক যুবক নিহত হয়েছেন।
হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আমিনুল হক সরকার জানান, “শুক্রবার দুপুরে হাসপাতালে নিয়ে আসার পর ওই যুবককে মৃত ঘোষণা করা হয়। তার বুকে ও পিঠে গুলি লেগেছে।”
নিহত মোস্তাক আহমেদ (২৬) পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (পিজিবি) ঠিকাদারের অধীনে লাইনম্যানের কাজ করতেন। তার বাড়ি সিলেটের টুকেরবাজার এলাকায় বলে জানা গেছে।
এর আগে, হবিগঞ্জ শহরের তিনকোনা পুকুরপাড় এলাকায় বেলা সাড়ে ৩টার দিকে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে হবিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু জাহিরের বাসার গেট ভাঙচুর এবং ১০টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়েও আগুন দেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘোষিত ‘প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল’ এর অংশ হিসেবে জুমার নামাজের পর হবিগঞ্জ শহরের কোর্ট মসজিদের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেন। এ সময় পূর্ব টাউন হল এলাকায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেন। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মিছিলে যোগ দিয়ে সংহতি প্রকাশ করেন বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
মিছিলটি টাউন হল এলাকায় পৌঁছালে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আগুন দেওয়া হয় এবং সংসদ সদস্য আবু জাহিরের বাসায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও বাসার সামনে থাকা মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়।
পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সহশ্রাধিক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. খলিলুর রহমান জানান, “ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ঢুকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এরপরই সংঘর্ষ বাঁধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সহশ্রাধিক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়েছে।”
সংসদ সদস্য আবু জাহির বলেন, “ছাত্র আন্দোলনে বিএনপি-জামায়াতের লোকজন প্রবেশ করে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আগুন দেয় এবং আমার বাসভবনে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। বাসার সামনে থাকা ১০টি মোটরসাইকেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।”
হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আমিনুল হক বলেন, “সংঘর্ষের সময় মোস্তাক আহমেদ শহরে জুতা কিনতে গিয়েছিলেন। তখন তিনি গুলিবিদ্ধ হন বলে শুনেছি।”