নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি কমার প্রবণতা অব্যাহত আছে। দেশে চলতি বছরের আগস্টে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ, যা ১১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এমন চিত্র উঠে এসেছে।
তথ্য অনুযায়ী, আগস্টে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ, যা ১১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। আলোচ্য এ মাসের প্রবৃদ্ধি ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে প্রবৃদ্ধির চেয়ে সামান্য বেশি। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেসরকারি খাতের একটি ব্যাংকের উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ধারাবাহিকভাবে নীতি সুদহার বৃদ্ধি করছেন। এতে সব ধরনের ঋণের সুদ হার বাড়তে শুরু করেছে। ফলে, ঋণগ্রহীতারা ধীরগতিতে ঋণ নেওয়ার কৌশল নিয়েছেন।
সর্বশেষ গত ২৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক নীতি সুদহার ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলো। এর ফলে ওভারনাইট রেপো সুদহার ৯ দশমিক ৫০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এর ফলে ঋণসহ সব ধরনের ব্যাংকিং পণ্যের ওপর সুদের হার বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ৮ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ (বিপিএম ৬) ছিল ১ হাজার ৯৮২ কোটি ডলার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি বেসরকারি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেছেন, রেকর্ড পরিমাণ খেলাপি ঋণের কারণে ব্যাংকগুলোর ঋণ দেওয়ার সক্ষমতা ক্রমাগত কমছে।
তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। ব্যাংকগুলোর বিতরণকৃত ঋণের ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশই এখন খেলাপি।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়াতে হলে অবশ্যই সরকারকে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ গ্রহণ কমাতে হবে। আর মূল্যষ্ফীতি ছয় থেকে সাত মাসের মধ্যে সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনা সম্ভব হলে নীতি সুদহার, ব্যাংকঋণের সুদহারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব পরিলক্ষিত হবে।