অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক: নারায়নগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, সাভার, আশুলিয়া, মাওনাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত স্পিনিং, উইভিং ও ডাইং-প্রিন্টিং-ফিনিশিং মিলে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস না পাওয়া উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। তাই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস চাচ্ছেন টেক্সটাইল খাতের মালিকরা।
মঙ্গলবার নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস চেয়ে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ কর্পোরেশন (পেট্টোবাংলা) চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি দিয়ে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ)।
চিঠিতে জানান, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে টেক্সটাইল ও ক্লদিংয়ের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। এ লক্ষ্যে সরকার শুরু থেকেই টেক্সটাইল মিলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের পদক্ষেপ গ্রহন করে ও ক্যাপটিভ পাওয়ার জেনারেশনকে উৎসাহিত করে। এরই ধারাবাহিকতায় ৯০ দশক থেকে প্রাইমারি টেক্সটাইল খাতের স্পিনিং, উইভিং ও ডাইং-প্রিন্টিং-ফিনিশিং উপখাতে ব্যাপক বিনিয়োগ হয়।
বিটিএমএ’র তথ্যমতে, এ খাতে বিনিয়োগের পরিমান প্রায় ১ লক্ষ ৮০ হাজার কোটি টাকা। টেক্সটাইল খাতের জিডিপিতে অবদান প্রায় ১৩%, দেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৮৬ শতাংশ এ খাতে থেকে অর্জিত হয় এবং তৈরী পোশাক রপ্তানির মাধ্যমে প্রাইমারী টেক্সটাইল খাত প্রায় ৬৫-৭০ শতাংশ বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় করে থাকে। অন্যদিকে প্রাইমারি টেক্সটাইল খাতের মিলগুলি স্থানীয় জনগোষ্ঠির বন্ত্রের মৌলিক চাহিদার প্রায় সম্পূর্নই যোগান দিচ্ছে। এর ফলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হচ্ছে যা দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে ব্যবহার হচ্ছে। এ খাতে কর্মরত জনগোষ্ঠির পরিমান ১০-১২ লক্ষের মতো যার প্রায় ৬০% ই হচ্ছে মহিলা কর্মী।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করে, দেশের অর্থনীতিতে টেক্সটাইল ও ক্লদিংয়ের অবদান অপরিসীম। অথচ এখাতটি বিগত ৩ বছর ও তার বেশি সময় যাবত বিদ্যুৎ ও তীব্র গ্যাস সংকটের কারনে স্বাভাবিক উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না। গত কয়েকমাস যাবত মিলগুলি তাদের উৎপাদন ক্ষমতার গড়ে ৪০-৫০% ব্যবহার করতে পেরেছে। ফলশ্রুতিতে সুতা ও কাপড়ের উৎপাদন হ্রাস ও উৎপাদন খরচ বৃদ্ধিসহ ফেব্রিক প্রসেসিং ব্যয়ও বৃদ্ধি পেয়েছে যা এ খাতের প্রতিযোগিতার সক্ষমতাকে মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন করছে।
এর সরাসরি প্রভাব রপ্তানিমুখী তৈরী পোশাক শিল্পে পড়েছে। গ্যাসের অভাবে যদি বিটিএমএ’র মিল সমূহ সময়মতো তৈরী পোশাক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানকে সুতা/কাপড় সরবরাহ করতে না পারে তাহলে যথাসময়ে পণ্য জাহাজীকরন করা সম্ভব হবে না। গ্যাসের তীব্র সংকট থেকে পরিত্রান প্রদানের লক্ষ্যে মিল সমূহে নিয়মিত গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য বারংবার সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অনুরোধ করেও গ্যাস সরবরাহে কোন অগ্রগতি পাওয়া যায়নি বরং গত কয়েকদিন যাবত মিল সমূহে গ্যাসের সরবরাহ প্রায় নেই বললেই চলে।
এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে মিলগুলি আগামীতে আর কতদিন চালু রাখা সম্ভব হবে তা এমতাবস্থায়, গ্যাসের তীব্র সংকট থেকে পরিত্রান প্রদানের লক্ষ্যে মিল সমূহে নিয়মিত গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য বারংবার সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অনুরোধ করেও গ্যাস সরবরাহে কোন অগ্রগতি পাওয়া যায়নি বরং গত কয়েকদিন যাবত মিল সমূহে গ্যাসের সরবরাহ প্রায় নেই বললেই চলে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে মিলগুলি আগামীতে আর কতদিন চালু রাখা সম্ভব হবে তা নিয়ে আমরা গভীরভাবে শংকিত।