সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি: যখন কোনো রাজনৈতিক ইস্যু নেই, তখনই বিএনপি ভারত বিরোধীতা করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
পাঁচ দশক পরেও বিএনপি স্বাধীনতা বিরোধী ভূমিকা রাখছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ বিরোধিতা আগেও হয়েছে। এই বিরোধীরা পাকিস্তান আমলে বিরোধীতা করেছে। যখন কোনো ইস্যু থাকে না, তখনই ভারত বিরোধীতা। এখনও সেটা হচ্ছে। নতুন কিছু না।
মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান স্বাধীনতা দিবসে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
কাদের বলেন, আমরা খুব দূরে না গিয়ে, পলাশীর আম্রকাননে স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হওয়ার ১০০ বছর পর এখানে ব্যারাকপুরে সিপাহিরা প্রথম স্বাধীনতার জন্য মঙ্গল পাণ্ডের নেতৃত্বে বিদ্রোহ করে। এরপর তিতুমীর, ক্ষুদিরাম, সূর্যসেন, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, বিশ্বনাথ, ফকির মজনু শাহ, ফকির মূসা শাহ, দেবী চৌধুরানী, সন্যাস বিদ্রোহ, ফকির বিদ্রোহ, তিতুমীরের বাঁশেরকেল্লা অনেক বিপ্লবী নেতা, অনেকে চেষ্টা করেছেন। নজরুল বলেছিলেন, তোরা সব জয়ধ্বনি কর। স্বাধীনতা আসে। নেতাজি সুভাষ বলেছিলেন, তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি স্বাধীনতা দেবো। স্বাধীনতা আসে।
তিনি আরও বলেন, হাজার বছর পর পলাশীর যে রক্ত, পলাশির পরাজয়ের প্রতিশোধ নিয়ে ১৯৭১ সালে বাংলার কিংবদন্তি বীর, বিজয়সীন থেকে শুরু করে গণতান্ত্রিক গোপালের প্রদর্শিত পথ ধরে, এ বাংলার মাটিতে ১৯৭১ সালে সার্বভৌম বাংলার রুপকার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
আওয়ামী লীগের এই শীর্ষ নেতা বলেন, আজকে আমাদের দেশে স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে বিতর্ক করে। এতো বছর পরও সেই বিতর্ক চলছে। আমাদের বক্তব্য— ঘোষণার আরও পাঠক আছে। ঘোষণার পাঠক ঘোষক হতে পারে না। আবুল কাশেম সন্ধি, এমএ হান্নান, অনেকেই ঘোষণা পাঠ করে বঙ্গবন্ধুর নামে। সেখানে জেনারেল জিয়া, তৎকালীন মেজর জিয়াও বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছিলেন।
তিনি বলেন, কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কে ঘোষক, এ বিতর্কের অবসান তখনই হবে, যখন আমরা সত্যের অনুসন্ধান করতে যাব। সেটা হচ্ছে এই স্বাধীনতার ঘোষণার ম্যান্ডেট এ অঞ্চলের জনগণের পক্ষ থেকে একমাত্র বঙ্গবন্ধুই পেয়েছিলেন ৭০ সালের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। আর কারো, কোনো বৈধ অধিকার নেই স্বাধীনতা ঘোষণা করার।
তিনি আরও বলেন, আজকে এত বছর পর আমাদের ভাবতে হচ্ছে। এ-ই দেশেরই মানুষ, এই দেশেরই অগণতান্ত্রিক, সাম্প্রদায়িক শক্তি, এখনো আমাদের বিজয়, আমাদের স্বাধীনতা সুসংহত করণের বিরুদ্ধে অন্তরায় সৃষ্টি করছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আজকে এ দিনে আমাদের শপথ হবে বিএনপির নেতৃত্বে যে সাম্প্রদায়িক অশুভ শক্তি বিজয়কে সংহতকরণে বাধা বা অন্তরায় হয়ে আছে, এই অশুভ শক্তিকে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা নেতৃত্বে আমরা এদেরকে প্রতিহত করবো, পরাভূত করবো, পরাজিত করবো। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা অভিমুখে এগিয়ে যাব।
এ সময় তার সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।