প্রকৃতিতে শীতের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। আর শীত আসার সাথে সাথে আমাদের ত্বকেও শুরু হয় পরিবর্তন। শুষ্ক এবং নিস্তেজ হয়ে পড়া ত্বক নিয়ে বিড়ম্বনার শেষ থাকে না রুক্ষতার এই মৌসুমে। শীতে ত্বক প্রাণবন্ত রাখতে আয়ুর্বেদ পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। রুক্ষ ত্বকের প্রাকৃতিক প্রতিকার প্রদান করে বিভিন্ন ভেষজ। ত্বক পুনরুজ্জীবিত ও উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে এগুলো। এই শীতে ত্বকের স্বাস্থ্য এবং জীবনীশক্তি বাড়াতে পাঁচটি সহজ আয়ুর্বেদিক প্রতিকারের ব্যাপারে জেনে নিন।
১। তেল মালিশ (অভঙ্গ)
শীতকালে ত্বকের যত্নের জন্য আয়ুর্বেদের একটি মৌলিক কৌশল হচ্ছে দৈনিক তেল মালিশ, যা অভঙ্গ নামে পরিচিত। গরম তিলের তেল, বাদাম বা নারিকেল তেল এই ম্যাসাজের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। গোসলের আগে হালকা গরম তেল দিয়ে সারা শরীরে ম্যাসাজ করুন। এটি শুধুমাত্র ত্বককে ময়শ্চারাইজ করতে সাহায্য করে না, বরং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং পেশীর টান থেকে মুক্তি দেয়। স্নায়ুতন্ত্রকেও শান্ত করে অভঙ্গ। কনুই এবং হাঁটুর মতো শুষ্কতা প্রবণ ত্বকে ভালো করে মালিশ করুন তেল। ত্বকের শুষ্কতা দূর হওয়ার পাশাপাশি ক্লান্তি দূর করতেও সহায়ক অভঙ্গ।
২। হারবাল ফেস মাস্ক
প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি আয়ুর্বেদিক ফেস মাস্ক ত্বকের গভীরে পুষ্টি জোগাতে পারে। মধু এবং দই সমপরিমাণে মিশিয়ে একটি সহজ এবং কার্যকর মাস্ক তৈরি করে নিন। মধু ময়শ্চারাইজিং এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন। অন্যদিকে দই ত্বককে প্রশমিত করে এবং হাইড্রেট করে। মুখ এবং ঘাড়ে মাস্কটি ২০ মিনিটের জন্য লাগিয়ে রেখে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্রতিকারটি আর্দ্রতা পূরণ করতে পারে ত্বকের। এছাড়া হলুদ, চন্দন এবং অ্যালোভেরার মতো অন্যান্য আয়ুর্বেদিক উপাদানগুলোও ব্যবহার করতে পারেন ত্বকে।
৩। ভেষজ চায়ে হাইড্রেটেড থাকুন
ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য হাইড্রেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে শুষ্ক শীতের সময়ে। আয়ুর্বেদ ভেতর থেকে হাইড্রেটেড থাকার জন্য উষ্ণ ভেষজ চা পান করার পরামর্শ দেয়। আদা, দারুচিনির মতো ভেষজযুক্ত চা পান করুন। এগুলো কেবল উষ্ণতাই দেয় না, বরং প্রদাহবিরোধী এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যও রয়েছে। ভেষজ চা শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে এবং ত্বক পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যকর রাখে।
৪। ঘি দিয়ে পুষ্টিকর ডায়েট
আয়ুর্বেদ খাদ্য এবং ত্বকের স্বাস্থ্যের মধ্যে সংযোগের উপর জোর দেয়। খাদ্যতালিকায় ঘি বা ক্ল্যারিফাইড মাখন অন্তর্ভুক্ত করা শীতকালে ত্বকের জন্য উপকারী হতে পারে। ঘি অপরিহার্য ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ এবং ময়শ্চারাইজিং বৈশিষ্ট্য রয়েছে এর, যা শুষ্কতা মোকাবেলায় সহায়তা করে। এছাড়া কোলাজেন উৎপাদন বাড়াতে এবং ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন ডায়েটে।
৫। ত্রিফলার সাহায্যে সুস্থ ত্বক
ত্রিফলা ডিটক্সিফাইং এবং পুনরুজ্জীবিত করার বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত। ঘুমানোর আগে কুসুম গরম পানির সাথে ত্রিফলা পাউডার মিশিয়ে খান। পাচনতন্ত্রকে পরিষ্কার করতে সাহায্য করবে এটি। ফলে ভেতর থেকে সুস্থ থাকবে ত্বক। এছাড়া ত্রিফলা হজমে সাহায্য করে এবং টক্সিন নির্মূল করে।