নিজস্ব প্রতিবেদক : চতুর্থ শিল্প বিল্পব ও পরিবর্তিত বিশ্ব ব্যবস্থার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে নতুন শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রবিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
২০১০ সালে ২ কোটি ৭৬ লাখ ৬২ হাজার ৫২৯ জন শিক্ষার্থীকে ১৯ কোটি ৯০ লাখ ৯৬ হাজার ৫৬১ কপি পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এবারও পহেলা জানুয়ারি প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভিন্ন স্তরে ৩ কোটি ৮১ লক্ষ ২৮ হাজার ৩৫৪ জন শিক্ষার্থীর মাঝে ৩০ কোটি ৭০ লক্ষ ৮৩ হাজার ৫১৭ কপি পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে।’
২০১০ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণের সংখ্যা হবে সর্বমোট ৪৬৪ কোটি ৭৪ লাখ ২৯ হাজার ৮৮৩ কপি।’
‘দেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে বিদ্যালয় ও একটি করে কলেজ সরকারিকরণের লক্ষ্যে বর্তমানে ৩৫৫টি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৩২৫টি বেসরকারি কলেজ সরকারিকরণ করা হয়েছে উল্লেখ্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালার আলোকে ২০০৯ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের আওতাধীন ৫ হাজার ৯৭টি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। নতুন এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদি প্রতি মাসে প্রদান করা হয়েছে।’
২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮০ হাজার ৮০৬ জন, বেসরকারি কলেজের ১৭ হাজার ৪৫৮ জন অর্থাৎ সর্বমোট ৯৭ হাজার ৮৬৪ জন শিক্ষক-কর্মচারীকে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়ন, চতুর্থ শিল্প বিল্পব ও পরিবর্তিত বিশ্ব ব্যবস্থার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম তরুণ প্রজন্ম গড়ে তোলার লক্ষ্যে ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১’ প্রণয়ন করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১’ শিক্ষার্থীদের মুখস্থবিদ্যার পরিবর্তে তাদের কৌতুহল, জিজ্ঞাসা, গবেষণা ও ভাবনার শক্তিকে জাগ্রত করবে এবং নেতৃত্বের গুনাবলি বিকশিত করবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘শিক্ষক কেন্দ্রিক ব্যবস্থা থেকে শিক্ষার্থী কেন্দ্রিক শিক্ষায় উত্তরণের ওপর আমরা গুরুত্বারোপ করেছি। নতুন বিশ্ব পরিস্থিতিতে টিকে থাকার মতো যোগ্য প্রজন্ম গড়ে তুলতে প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণির অবিচ্ছিন্ন শিক্ষাক্রম উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সেসিপ-প্রকল্পের আওতায় ৭১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আইসিটি লার্নিং সেন্টার স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত সংস্কার করা হয়েছে। ৬৪০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভোকেশনাল কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ভবন নির্মাণের কাজ চলমান ও ৪৬টি জেলা শিক্ষা অফিসের সম্প্রসারণ করা হয়েছে।’
২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মোট ৩৩ হাজার ২৮৫টি মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম; ২ হাজার ৩০৬টি কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন এবং এ পর্যন্ত প্রায় ৫ লাখ শিক্ষককে আইসিটি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা করা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের শিক্ষার্থীরাই স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বির্নিমাণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে আমার বিশ্বাস।’