নিজস্ব প্রতিবেদক: টানাটানির সংসারে টাকা জমানো সহজ নয়। তবে বাস্তবতা হলো, আপনার যদি অঢেল সম্পদ না থাকে, তাহলে বিপদ-আপদে এই সঞ্চয়ই হবে মূল ভরসা। কিন্তু টাকা জমাবেন কীভাবে? চলুন, জেনে নেওয়া যাক টাকা জমানোর সাত উপায়।
ফোর্বস সূত্রে টাকা জমানোর এসব তথ্য জানা গেছে।
খরচবিহীন দিনযাপন
সপ্তাহে অন্তত একটি দিন খরচহীন কাটান। ছুটির দিনটাকে বেছে নিতে পারেন। এই দিনে কোনো অর্থ খরচ করবেন না। বাড়িতে থাকা উপকরণেই দিনটি পার করুন।
কম কিনুন, সস্তায় কিনুন
প্রয়োজন ছাড়া কখনোই কিছু কিনবেন না। পোশাক, ফ্যাশনের অনুষঙ্গসহ বহু জিনিস প্রায়ই কেনার দরকার পড়ে না। যত্ন করে ব্যবহার করলে দিব্যি বহুদিন চলে যায়। আর যখন যা কিনবেন, সেটির জন্যও অতিরিক্ত ব্যয় করবেন না। সুপারশপে আরামে কেনাকাটা করা গেলেও সেখানে খরচ বেশি। অবশ্য মূল্যছাড়ের সুবিধা থাকলে কাজে লাগাতে পারেন।
টেকসই উপকরণ ব্যবহার করুন
এমন জিনিস বেছে নিন, যা বহুবার ব্যবহার করা যায়। যেমন টিস্যু পেপারের বিকল্প হিসেবে রুমাল। ওয়ান টাইম সামগ্রী এড়িয়ে চলুন। এমন কাপড় কিনুন, যেটির রং পাকা। তা ছাড়া বহু জিনিসই কিন্তু রিসাইক্লিং বা আপসাইক্লিং করা যায়।
খরচ যা করবেন, নগদে করুন
জীবনযাপনের জন্য কিছু খরচ তো আপনাকে করতেই হবে। এই খরচ করুন নগদ টাকায়। অর্থাৎ কার্ডের ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। কার্ডে খরচ করলে বেহিসাবি হয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকে। তা ছাড়া ডেবিট কার্ডে মূল্য পরিশোধের জন্য কোথাও কোথাও বাড়তি অর্থ পরিশোধ করতে হতে পারে।
আর ক্রেডিট কার্ডে মূল্য পরিশোধ কিন্তু একধরনের ঋণ, যা আপনাকেই পরে শোধ করতে হবে। তার চেয়ে বরং হাতে হাতে খরচ করুন। আবার ধরুন, মুঠোফোনভিত্তিক লেনদেনে ক্যাশব্যাকের সুযোগ পেলেন, তাহলে সেটি কাজে লাগাতে পারেন।
বাইরের খাবার খাবেন না
কাজের জায়গায় খাবার কিনে খান? বাড়ি থেকে নিয়ে যান। বাড়ির খাবার দিয়ে পিকনিকও করতে পারেন। উৎসব-আয়োজনের রান্নাও বাড়িতে হোক। তবে রান্নার সব দায়িত্ব কারও একার ওপর চাপিয়ে দেবেন না।
তাতে তিনি হাঁপিয়ে উঠবেন। আর তাঁকে এই চাপ থেকে মুক্তি দিতে হয়তো বাইরে খাওয়ার প্রয়োজন দেখা দেবে। তার চেয়ে বরং রান্নার কাজ, এমনকি সব গুছিয়ে রাখা অবধি রান্নাঘরের কাজগুলো সবাই হাতে হাতে করুন। এতে পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় হবে। আর বাড়ির খাবার খেলে খাদ্যবাহিত রোগের ঝুঁকিও কমবে।
ঘরের খাবারেও খরচ কমান
তালিকা ছাড়া বাজার করবেন না। কখনোই অতিরিক্ত পদ রান্না করবেন না। কম খরচে আমিষসহ সব পুষ্টি উপাদান গ্রহণ করতে চেষ্টা করুন। এই যেমন নানা রকম ডাল ও বীজ থেকে অনেকটা আমিষ পাবেন। খানিকটা প্রাণীজ আমিষের ব্যবস্থা করতে পারলে তা অন্তঃসত্ত্বা কিংবা স্তন্যদানকারী মা এবং বাড়ন্ত শিশু–কিশোরদের জন্য বরাদ্দ রাখুন।
যেসব খাদ্য উপকরণের খোসা ও বীজ খাওয়া যায়, সেগুলো ফেলবেন না। পুষ্টি তো পাবেনই, উপরন্তু একটা আলাদা পদ তা দিয়ে তৈরি হয়ে যেতে পারে। বিভিন্ন সময় বন্ধু-স্বজনদের আমন্ত্রণ জানাতে প্রথাগত উপায়ের বাইরে গিয়ে ওয়ান ডিশের আয়োজন করতে পারেন। অর্থাৎ, সেখানে প্রত্যেকেই একেকটি পদ আনবেন।
অন্যান্য অপচয়ও এড়িয়ে চলুন
বাজেট করে খরচ করুন। বিদ্যুৎ ও অন্যান্য শক্তির অপচয় রোধ করুন। দিনের আলো কাজে লাগান। রাতে কাজ করুন কম। আবার, বিনোদনের খোঁজ মিলতে পারে ইন্টারনেটেই। সে ক্ষেত্রে টেলিভিশনের কেব্ল সংযোগ বাদ দিতে পারেন।
সিনেমা হলে না গিয়ে বাড়িতে দেখুন সবাই মিলে। খুব প্রয়োজন না পড়লে জিমনেসিয়ামে খরচ করবেন না। শরীরচর্চার অন্যান্য অনেক সুযোগ এমনিতেই মিলবে।