নিজস্ব প্রতিবেদক: ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে হত্যার অভিযোগে পৃথক দুই মামলায় আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট দুই নেতা ড. আব্দুর রাজ্জাক ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খানকে দুই দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। তারা দুজনই সাবেক মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য।
রিমান্ডের শুনানিতে দুই নেতাই আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দিয়েছেন এবং তারা দাবি করেছেন, তারা নির্দোষ। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তারা আদালতের কাছে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেছেন।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) রাতে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে রাজধানী থেকে গ্রেফতার হন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী ফোরামের দুই নেতা। আজ মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে তাদের আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুজনেরই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ড শুনানিতে সাবেক কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনা শেষে আমেরিকার বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি সম্পন্ন করেছি। যেখানকার ছাত্র নীল আর্মস্ট্রং। আমি ২৪ বছর সরকারি চাকরি করেছি বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে। দেশপ্রেমের তাড়নায় আওয়ামী লীগে যোগ দিই। স্বাধীনতার আগে স্বৈরাচার আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে জনসমাবেশ করেছি। ৬৯ এ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। ৭১ এ মুক্তিযুদ্ধ শুধু অংশগ্রহণ না নেতৃত্ব দিয়েছি।’
রাজ্জাক বলেন, ‘আমার বয়স যখন ১১ মাস তখন বাবা মারা যান। আমি ও আমার ভাই নানা বাড়িতে মানুষ হয়েছি। আমরা সেল্ফ ডিপেন্ডেন্ট ছিলাম। আমার পরিবারের সবাই যার যার জায়গায় প্রতিষ্ঠিত। আমাকে যে অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে তার সঙ্গে বিন্দুমাত্র সম্পৃক্ততা নেই। আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আমি আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চাই।’
অপরদিকে গোপালগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খান আদালতের উদ্দেশে বলেন, ‘জীবনে প্রথমবার এইভাবে আদালতে এসেছি। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সত্য নয়। এমন ধরনের কোনো কাজ আমি করিনি। আমার নির্বাচনী এলাকায় বিএনপির কোনো নেতাকর্মীদের নামে মামলা হয়নি।’
ফারুক খান বলেন, ‘আমি এলাকায় বলেছি, আমি শুধু আওয়ামী লীগের এমপি না আমি সবার এমপি। আমি কখনোই বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করিনি। গত সাতদিন থেকে আমি হাসপাতালে ভর্তি। আমার বাম পায়ে রড ঢুকানো, ক্রাচে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে আছি।’