অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক
একীভূতকরনের প্রক্রিয়ায় থাকা দূর্বল ব্যাংক কোন একটা পর্যায়ে গিয়ে যদি স্বতন্ত্রভাবে চলতে চায় সেই সুযোগ থাকবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে সেই ব্যাংকগুলোকে সেই সময়ের মধ্যে তাদের আর্থিক স্বাস্থ্য উন্নতি করতে হবে।
গতকাল কেন্ত্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক এ নতুন তথ্য জানিয়েছে। মেজবাউল হক বলেন, ‘একীভূতকরণে একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। এর বেশ কয়েকটি ধাপ আছে। সেই প্রক্রিয়ায় যতদিন শেষ না হবে ততদিন পর্যন্ত কোন ব্যাংকই একীভূত হবে না। এই প্রক্রিয়াকালীন সময় প্রতিটি ব্যাংকই নিজস্ব ধারায় চলবে।’
একীভূত করণের সময় যদি কোন ব্যাংক ভালো করে তারা যদি একীভূতকরণ করতে না চায় এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সেই যুযোগও থাকবে। তারা যদি সেচ্ছায় তাদের প্রচেষ্ঠায় আর্র্থিক সূচকগুলো ভালো করতে পারে। তখন যদি তারা একীভূতকরণ করতে না চায় তাহলে তারা সেটা করতে পারবে। চুক্তি মানে একীভূতকরণ না।,
সেই পরিস্থিতিতে দূর্বল ব্যাংকগুলোকে কোন সহযোগিতা কেন্দ্রীয় ব্যাংক করবে কী না এমন প্রশ্নে মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, ‘একীভূতকরণে সময় দূর্বল ব্যাংকগুলোকে কোন সহযোগিতা করবেনা কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে একীভূত হওয়ার পরে সবল ব্যাংককে সব ধরণের সহযোগিতা করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।’
মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, ‘একীভূতকরণ ব্যাংকগুলো সকল প্রকার দায়-দেনার হিসাব শেষ হওয়ার পরে উভয় পক্ষ যখন এক মত হবে তখন দুটি ব্যাংক একীভূতকরণ হবে। তখন সকল দায়-দেনা একটি ব্যাংকের। এছাড়া এখন যার যার মতো করে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করবে। ’
তিনি বলেন, এর মধ্যে পদ্মা ব্যাংক ও শরিয়াহভিত্তিক এক্সিম ব্যাংকের একীভূতকরণ বাস্তবায়ন করতে নিরীক্ষক নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ প্রতিষ্ঠানটি ব্যাংক দুটির সম্পদ মূল্যায়ন করবে।
মেজবাউল হক বলেন, এক্সিম ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংক একীভূত করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এজন্য ব্যাংক দুটির সম্পদ মূল্যায়ন করতে নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান রহমান রহমান অ্যান্ড হক’কে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি চূড়ান্ত রিপোর্ট দিবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে গত ১৮ মার্চ ব্যাংক দুটি একীভূতকরণের সমঝোতা চুক্তিতে সই করে। এটি ছিলো একীভূতকরণের প্রথম ধাপ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালায় বলা হয়েছে, সম্পদ মূল্যায়নে উভয় ব্যাংককে একমত হতে হবে। যদি তারা চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারে, তাহলে
বাংলাদেশ ব্যাংক মধ্যস্থতাকারী হয়ে মতপার্থক্য দূর করতে সহায়তা করবে। এদিকে এক্সিম ব্যাংক পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের অনুমোদনেরও প্রয়োজন। একীভূত করার বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন পেলে দুটি ব্যাংককে কোম্পানি আইন-১৯৯৪ এর আওতায় অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা মেনে চলতে হবে। তাদেরকে হাইকোর্টে আবেদন করতে হবে ও একীভূতকরণের প্রকল্প জমা দিতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, হাইকোর্টে অনুমোদনের পর দুই ব্যাংকের একীভূতকরণের বিষয়টি চূড়ান্তভাবে কার্যকর করা হবে। একীভূত হওয়ার পর তখন পদ্মা ব্যাংকের সম্পদ ও দায় এক্সিম ব্যাংকের সম্পদ ও দায় হিসেবে বিবেচিত হবে।
সম্প্রতি বেসরকারী খাতের পদ্মা ও ন্যাশনাল ব্যাংক, এবং রাষ্ট্রীয় খাতের রাকাব, বেসিক ও বিডিবিএল ব্যাংকের অন্য ব্যাংকের সাথে একীভূত বা বিলীন হওয়ার প্রক্রিয়া বা আলোচনা শুরু হয়েছে। এর মধ্যে শুধু পদ্মা ব্যাংকের সাথে এক্সিম ব্যাংকের চুক্তি হয়েছে । বাকি চারটির শুধু আলোচনা হয়েছে । এখনও কোনও চুক্তি হয়নি।
পাঁচটি দূর্বল ব্যাংক বাদে এখন আর কোনও ব্যাংককে একীভূতকরণের অনুমতি দেয়া হবেনা বলে গত সোমবার জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।