স্পোর্টস ডেস্ক: বাইশগজ দাপিয়ে বেড়ানোর পর রাজনীতির মাঠেও বাজিমাত করলেন সাকিব আল হাসান। গতকাল (রোববার) অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাগুরা-১ আসন থেকে বড় ব্যবধানে জয় পেয়ে প্রথমবারের মত সংসদে বসতে যাচ্ছেন টাইগার অধিনায়ক। অন্যদিকে, দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্তুজা।
ক্রীড়াবিদদের খেলার মাঠ থেকে রাজনীতির অঙ্গনে পদার্পণ নতুন নয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অবসর নেওয়ার পর অনেকে পুরোদস্তুর রাজনীতিবিদ হন। তবে এর ব্যতিক্রমও আছে। মাশরাফি জাতীয় দলে খেলা অবস্থাতেই সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। মাশরাফির পর টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও একই পথে হাঁটলেন।
এবারের আগে ২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রথমবারের মতো নড়াইল-২ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন মাশরাফি। নির্বাচনে জিতে সেবার জাতীয় সংসদের সদস্য হন মাশরাফি। সংসদ সদস্য হওয়ার পর তার অধিনায়কত্বেই বাংলাদেশ ২০১৯ বিশ্বকাপ ওয়ানডে খেলেছিল। এমপি হওয়ার পর দেশকে অধিনায়কত্ব করার কৃতিত্ব বাংলাদেশে সেটিই ছিল প্রথম। ২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়কত্ব করেছেন।
বছর পাঁচেক আগে তৎকালীন অধিনায়ক মাশরাফির দলীয় মনোনয়ন ও সংসদ সদস্য হওয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। অনেক ক্রিকেটপ্রেমী এর সমালোচনাও করেছিলেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড, নির্বাচন কমিশনের আইনে কোনো বাধা বা নির্দেশনা না থাকায় মাশরাফি সংসদ সদস্য হওয়ার পরেও জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব করে গেছেন। তাই সাকিব তিন ফরম্যাটে বাংলাদেশের অধিনায়ক ও গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হলেও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে আইনত কোনো বাধা ছিল না।
সরকারের বেতনভুক্ত কর্মকর্তা আমলারা অবসর নেওয়ার তিন বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় জাতীয় নির্বাচন করতে। আমলাদের ক্ষেত্রে এ রকম নিয়ম থাকলেও জাতীয় খেলোয়াড়দের জন্য এমন কোনো নিয়ম নেই। সংবিধান অনুসারে ২৫ বছর বয়স্ক বাংলাদেশি নাগরিক সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে। জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের চুক্তির আওতায়। ক্রিকেট বোর্ড থেকে মাসিক বেতন এবং ম্যাচ ফি পেয়ে থাকেন।বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড, নির্বাচন কমিশনের আইনে কোনো বাধা বা নির্দেশনা না থাকায় মাশরাফি সংসদ সদস্য হওয়ার পরেও জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব করে গেছেন। তাই সাকিবের ক্ষেত্রেও এমন কোনো বাধা থাকছে না।
সাকিব বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার হলেও অনেক ঘটনায় নিন্দিত। এজন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও বেশ কয়েকবারই বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে। জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর এখন ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে সাকিবের সম্পর্ক কি রকম দাঁড়ায় সেটা দেখার অপেক্ষায় রয়েছে ক্রীড়াঙ্গন। খেলার পাশাপাশি সাকিব বাণিজ্যিক অনকে কাজের সঙ্গে জড়িত। আবার তার পরিবার থাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। খেলা, পরিবার, বাণিজ্যিক কাজের সঙ্গে রাজনীতি ও জনসেবায় কতটুকু সময় দিতে পারেন এটাও দেখার অপেক্ষায় সাকিব ভক্তরা।
সাকিব ও মাশরাফির আগে ক্রীড়াবিদদের মধ্য থেকে সংসদ সদস্য হওয়ার সংখ্যাটা কম নয়। মেজর হাফিজ, হাসানুল হক ইনু, মাহবুব আরা বেগম গিনি, নাইমুর রহমান দুর্জয়,আব্দুস সালাম মুর্শেদীসহ আরো অনেকে সংসদ সদস্য হয়েছেন। তারা সবাই অবশ্য খেলা ছাড়ার পরই জাতীয় সংসদে জায়গা করে নিয়েছেন।