নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী ৭ জানুয়ারি দেশের কোনো দেশপ্রেমিক মানুষ ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।
তিনি বলেন, আগামী ৭ তারিখ কোনো দেশপ্রেমিক মানুষ ভোট কেন্দ্রে যাবে না। দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে যার ন্যূনতম দায়বোধ রয়েছে, তারা কেউই ভোট কেন্দ্রে যাবে না। এই দেশ আমাদের সবার। এই দেশকে রক্ষা করতে আমরা জীবন দিতে প্রস্তুত। সে কারণে দেশের মানুষ সংগঠিত হবে, লড়াই করবে, গলায় গামছা বেঁধে এদের (সরকার) ক্ষমতা থেকে নামাবে; এর প্রস্তুতি চলছে।
বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে একতরফা ভোট বর্জনের আহ্বানে গণসংযোগপূর্ব সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সরকার আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের নামে তামাশা করতে যাচ্ছে মন্তব্য করে জোনায়েদ সাকি বলেন, সরকার রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে এদেশের যারা আসল মালিক নাগরিকদের আবার ভয়ংকরভাবে অপমান করতে যাচ্ছে। তারা আবার গণতন্ত্র কেড়ে নিতে চাচ্ছে। ২০১৪ সালে তারা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়েছিল। ২০১৮ সালে তারা ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে যেতে না দিয়ে নিজেরাই ব্যালট পেপারে সিল মেরে বাক্স ভরে নিয়েছিল। আর আজকে ৭ তারিখে পরিকল্পিত সহিংসতার মাধ্যমে বিরোধী দলের ওপর সর্বাত্মক ক্র্যাকডাউন ও মাঠ খালি করে একতরফা নির্বাচনের ব্যবস্থা তৈরি করেছে।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে ভোটার আনা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ— এই আওয়াজ তুলে সরকার আজকে নানাভাবে মানুষকে ভয় দেখিয়ে, জোর করে ভোট কেন্দ্রে আনতে চায়। মানুষ যাতে বাধ্যতামূলকভাবে ভোট কেন্দ্রে আসে সেজন্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আদালতে রিট করা হয়েছে। এই হচ্ছে আওয়ামী লীগের দশা। তারা (সরকার) এমন নির্বাচন করে, যে নির্বাচনে মানুষ ভোট কেন্দ্রে যেতে চায় না। ভয়, আদালত, টাকা-পয়সা দিয়ে মানুষকে জোর করে ভোট কেন্দ্রে আনতে চায়। নাগরিকদের এই অপমান আমরা হতে দিতে পারি না।
তিনি আরো বলেন, এই সরকারের কোনো বক্তব্য দেশের মানুষ বিশ্বাস করে না। এই সরকারের বক্তব্য আন্তর্জাতিক বিশ্বেও গ্রহণযোগ্য হবে না।
সমাবেশে মিছিল নিয়ে আসার সময় সেগুনবাগিচায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতাকর্মীদের ওপর নৌকার একটি নির্বাচনী ক্যাম্প থেকে হামলা চালানো হয়েছে অভিযোগ করে দলটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, এই হামলায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খানসহ ৬-৭ জন আহত হয়েছেন। আমাদের ব্যানার কেড়ে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে। আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে আজকে তারা আক্রমণ করছে। এই হচ্ছে সরকারের সাহসের নমুনা। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং হামলাকারীদের অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।
গণতন্ত্র মঞ্চ দেশের মানুষের মনিকোঠায় স্থান করে নিয়েছে জানিয়ে ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, আমরা যেখানেই যাচ্ছি, জনগণ আমাদের সঙ্গে থাকছে। আমরা জনগণের পক্ষে লড়াই-সংগ্রাম করছি। জনগণ আমাদের পক্ষে থাকছে। এটাই আমাদের বড় বিজয়, এটাই আমাদের জন্য সম্মানের, গৌরবের। আমাদের এমপি-মন্ত্রী হওয়ার কোনো দরকার নেই। আমরা জনগণের সঙ্গে থাকবো।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে তারা বিভিন্ন এলাকায় ভোট বর্জনের আহ্বানে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করেন।