নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সামশুল হক চৌধুরীর নির্বাচনী প্রচারণায় একদিনে দুই দফা হামলার অভিযোগ উঠেছে নৌকার প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) উপজেলার শান্তিরহাট ও কুসুমপুরা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় পৃথক হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় হুইপের গাড়িবহর লক্ষ্য করে জুতা নিক্ষেপ এবং একপর্যায়ে হুইপের ভাই ফজলুল হক চৌধুরীকে মারধর ও লাঞ্ছনা করার অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া দ্বিতীয় দফায় হামলায় কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় একজন গুলিবিদ্ধ এবং বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে চারজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হুইপ সামশুল চট্টগ্রাম-১২ আসন থেকে ঈগল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে এবার নৌকা প্রতীক না পেয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করছেন। তার সমর্থকদের অভিযোগ— আসনটি থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর অনুসারীরা এসব হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে।
নৌকার প্রার্থী মোতাহেরুল চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। যদিও মোতাহেরুলের অনুসারীরা হামলার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শনিবার সকালে উপজেলার শান্তিরহাট এলাকা থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন হুইপ সামশুল হক চৌধুরী। বেলা ১২টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে তাদের গাড়িবহর আটকে দেয়। এরপর গাড়িবহর লক্ষ্য করে জুতা নিক্ষেপ করা হয়। ঘটনার সময় হুইপের ভাই গাড়ি থেকে নেমে পালানোর চেষ্টা করে। এরপর তাকে আটকে কান ধরে ওঠবস করতে বাধ্য করা হয়। পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে পটিয়া থানার পুলিশ পৌঁছে হুইপের বহরকে উদ্ধার করে।
এ ঘটনার পর বিকেলে উপজেলার কুসুমপুরা ইউনিয়নে নির্বাচনী গণসংযোগে নামেন হুইপ। বিকেল ৫টার দিকে ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে তাদের বহর দিনে দ্বিতীয় দফা হামলার শিকার হয়। এ সময় গাড়িবহরকে লক্ষ্য করে গুলি ও বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় হুইপের বোন সুলতানা ইয়াসমিন রেখাসহ (৪২) বেশ কয়েকজন আহত হন। তাদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ মনির হোসেন (৪৩), আহত রেখা, মো. রাসেল (৩৩) ও মো. কাসেমকে (৩৫) চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার বিষয়ে হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর ছেলে ও প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী নাজমুল করিম চৌধুরী বলেন, শনিবার আমাদের নির্বাচনী প্রচারণায় দুই দফা হামলা করেছে মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর সমর্থকরা। প্রথম দফায় শান্তিরহাট এলাকায় আমার চাচাকে মারধর ও একপর্যায়ে অস্ত্র তাক করে কানে ধরতে বাধ্য করা হয়। দ্বিতীয় দফা কুসুমপুরা ইউনিয়নে আবার হামলা করা হয়। আমরা এসব ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
ঘটনার বিষয়ে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলাইমান বলেন, শনিবার সকালে একবার হুইপের গাড়ি অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। আমরা উদ্ধার করেছি। বিকেলে আবার হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীদের অভিযোগ সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুল আলম আশেক বলেন, পটিয়ায় সংঘর্ষের ঘটনায় আহত চারজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন গুলিবিদ্ধ রয়েছেন।