নিজস্ব প্রতিবেদক: ডলার সংকটের এ সময়ে পণ্য রপ্তানি বাড়ানো জরুরি, তবে রপ্তানি সেভাবে বাড়ছে না। এমন পরিস্থিতির মধ্যে মাত্র ৬ মাসের ব্যবধানে দ্বিতীয় বারের মতো রপ্তানিতে প্রণোদনা কমিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
রোববার (৩০ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। নির্দেশনাটি দেশের সব তফসিলি ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আগে রপ্তানি আয়ের ওপর ০.৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত নগদ সহায়তা প্রদান করা হতো, যাতে রপ্তানিকারকদের উৎসাহিত করা যায় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে তাদের আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তোলা যায়। এখন নতুন ঘোষণার পর, সর্বোচ্চ হার ১৫ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ০.৩ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত প্রযোজ্য হবে বলে জানানো হয়েছে।
নতুন হার অনুযায়ী, রপ্তানিমুখী দেশীয় বস্ত্র খাতে শুল্ক বন্ড ও ডিউটি ড্রুব্যাকের পরিবর্তে বিকল্প নগদ সহায়তা কমিয়ে ১.৫ শতাংশ করা হয়েছে। আগে যা ৩ শতাংশ ছিল। ইউরো অঞ্চলে বস্ত্র খাতের রপ্তানিকারকদের প্রণোদনার হার ১.৫ শতাংশের অতিরিক্ত বিশেষ সহায়তাও ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.৫ শতাংশ করা হয়েছে। নীট, ওভেন ও সোয়েটারসহ তৈরি পোশাক খাতের সকল ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প অতিরিক্ত সুবিধা ১ শতাংশ কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছে। পাশাপাশি নতুন পণ্য বা নতুন বাজারে ৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে করা হয়েছে ২ শতাংশ। তৈরি পোশাক খাতে বিশেষ নগদ সহায়তা শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ করা হয়েছে।
পাটজাত চূড়ান্ত দ্রব্যে ৫ শতাংশ, পাটসুতায় ৩ শতাংশ এবং চামড়াজাত দ্রব্যাদি রপ্তানিতে ১০ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হবে। অন্য পণ্যগুলোর মধ্যে হাতে তৈরি পণ্যে ৬ শতাংশ, গরু-মহিষের নাড়িভুঁড়ি, শিং ও রগে ৬ শতাংশ, হিমায়িত চিংড়ি ও অন্যান্য মাছ রপ্তানি খাতে ১.৫ থেকে ৮ শতাংশ, হালকা প্রোকৌশল পণ্য রপ্তানিতে ১০ শতাংশ, কারখানাগুলোতে উৎপাদিত ক্রাস্ট ও ফিনিশড লেদার রপ্তানিতে ৬ শতাংশ, পেট বোতল-ফ্লেক্স রপ্তানিতে ৬ শতাংশ, পেট বোতল-ফ্লেক্স থেকে উৎপাদিত পলইয়েস্টার স্টাপল ফাইবার রপ্তানিতে ৬ শতাংশ, জাহাজ রপ্তানির বিপরীতে ৬ শতাংশ, পাটকাঠি থেকে উৎপাদিত কার্বন ও জুট পার্টিকেল বোর্ড রপ্তানিতে ৮ শতাংশ, শস্য ও শাকসবজির বীজ রপ্তানিতে ৮ শতাংশ, ফার্নিচার রপ্তানিতে ৮ শতাংশ, প্লাস্টিকদ্রব্য রপ্তানিতে ৬ শতাংশ, দেশে উৎপাদিত কাগজ ও কাগজ জাতীয় দ্রব্য রপ্তানিতে ৬ শতাংশ এবং আগর ও আতর রপ্তানিতে ৮ শতাংশ প্রণোদনা পাবেন রপ্তানিকারকরা।
এছাড়া ফার্মাসিউটিক্যালস পণ্যে ৫ শতাংশ, অ্যাকুমুলেটর ব্যাটারিতে ১০ শতাংশ, সফটওয়্যার, আইটিইএস ও হার্ডওয়্যার রপ্তানিতে ৬ শতাংশ, সফটওয়্যার ও আইটিইএস সেবা রপ্তানিতে ব্যক্তি পর্যায়ের ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ২.৫ শতাংশ, মোটরসাইকেল রপ্তানিতে ৬ শতাংশ, রেজার ও রেজার ব্লেড রপ্তানিতে ৬ শতাংশ, সিরামিক পণ্য রপ্তানিতে ৬ শতাংশ, টুপি রপ্তানিতে ৭ শতাংশ, কাকড়া ও কুঁচে রপ্তানিতে ৬ শতাংশ, কেমিক্যাল পণ্য (ক্লোরিন, হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড, কস্টিক সোডা এবং হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড) রপ্তানিতে ৫ শতাংশ, কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যাল হোম ও কিচেন অ্যাপ্লায়েন্স পণ্য রপ্তানিতে ৬ শতাংশ, চাল রপ্তানিতে ৩ শতাংশ, চা রপ্তানিতে ২ শতাংশ, স্টিল রপ্তানিতে ২ শতাংশ, বাইসাইকেল ও এর পার্টস রপ্তানিতে ৩ শতাংশ, সিমেন্ট সিট রপ্তানিতে ৩ শতাংশ, বেজা, বেপজা ও হাইটেক পার্ক এ অবস্থিত প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে রপ্তানিতে দশমিক ৩ শতাংশ থেকে ২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক।