অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক: এক বছরে খেলাপি ঋণ আদায়সহ আশ্চর্যজনক পরিচালন মুনাফা করেছেন রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংক। এছাড়া নতুন একাউন্ট বৃদ্ধিসহ অনেক সূচকেই ব্যাপক পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছে ব্যাংকটি। বর্তমানে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর। তিনি ২০২২ সালের আগস্টে এই ব্যাংকে যোগদান করেন। এরপর থেকে ব্যাংকের খেলাপি ঋণ আদায় থেকে শুরু করে মুনাফা বৃদ্ধি পেয়েছে ব্যাংকটির। এছাড়াও গত দুই বছরে ব্যাংকটির নানা সূচকেই ‘পরিবর্তন’ হয়েছে।
জানা যায়, ২০২৩ সালে সালে সাড়ে ৫শ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ের পাশাপাশি ৭শ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা অর্জন করেছে ব্যাংকটি।এছাড়া এক বছরে নতুন ৮ লাখ একাউন্টও যুক্ত হয়েছে বলে বলছে ব্যাংকটি।
ব্যাংকটির কর্মকর্তারা বলছেন গত দুই বছরে ব্যাংকটির নানা সূচকেই ‘ইতিবাচক’ পরিবর্তন হয়েছে।
২০২২ সালে রূপালী ব্যাংকের মুনাফা হয়েছিল ১শ কোটি টাকা। আর ২০২০-২১ সালে খেলাপি ঋণ আদায় হয়েছিলো প্রায় ১৫০ কোটি টাকা।
ব্যাংকটির কর্মকর্তারা বলছেন ‘বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও’ গত দুই বছরে বিতরণকৃত কোন ঋণ ‘খেলাপি হয়ে পড়েনি’। বরং সম্প্রতি অবলোপনকৃত খেলাপি ঋণ থেকে ৪০ কোটি টাকা আদায় হয়েছে। এর আগে ২০২০-২১ সালে অবলোপনকৃত খেলাপি ঋণ আদায় হয়েছিলো প্রায় ২০ কোটি।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে ৫১ বছরে ব্যাংকটির সক্রিয় একাউন্ট ছিল ২২ লাখ, বর্তমানে গ্রাহক ৩০ লাখ। গত দুই বছরে ৫৩ হাজার কোটি টাকা থেকে ৬৮ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছেছে ব্যাংকটির আমানত। ২০২০-২১ সালে আমানত ছিল ৫০ হাজার থেকে ৫২ হাজার কোটি টাকা।
ব্যাংকটির মোট শাখা ৬০৯টি। এর মধ্যে মাত্র ৭টি লোকসানি শাখা, যা ইতিহাসে সর্বনিম্ন। ২০২০-২১ সালে লোকসানি শাখা ছিল ২০টির মত।
ব্যাংকটির সাম্প্রতিক ‘সাফল্যের’ বিষয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেয়ার পরে পরিচালনা পর্ষদের সহযোগিতায় নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। ফলে কাঙ্ক্ষিত সুফল পেয়েছি। খেলাপি ঋণ আদায় ও পরিচালনা মুনাফাসহ বিভিন্ন সূচকেই সাফল্য এসেছে।’ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর ১৯৯০ সালে ব্যাংকটিতে যোগ দিয়ে ২০২২ সালের আগস্ট থেকে প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব পালন করছেন।
সম্প্রতি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ২০২৩ সালের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে। প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগের বছরের তুলনায় ব্যাংকের ইপিএস সমন্বিতভাবে দ্বিগুণের বেশি বেড়ে ৬১ পয়সা থেকে ১ টাকা ৩৫ পয়সা হয়েছে এবং এককভাবে তিন গুণের বেশি বেড়ে ৪৫ পয়সা থেকে ১ টাকা ১৭ পয়সা হয়েছে। পাশাপাশি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো ঋণাত্মক ২৭ টাকা থেকে বেড়ে ১১০ টাকা ৩২ পয়সা হয়েছে।
২০২৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩৫ টাকা ৮৯ পয়সায়।