ক্রীড়া প্রতিবেদক: তামিম ইকবালের ৭১ রানের পর সাইফউদ্দিনের ৬ বলে ২৩ রানের ক্যামি ইনিংসে ১৮৬ রান সংগ্রহ করে ফরচুন বরিশাল। চট্টগ্রামের ব্যাটিং বান্ধব উইকেটে রানটা মোটেও কঠিন হওয়ার কথা নয়। কিন্তু টপ অর্ডারের ব্যাটিং ব্যর্থতায় এই লক্ষ্যটাই কঠিন হয়ে দাঁড়ায় পয়েন্ট টেবিলে সবার নিচে থাকা দুর্দান্ত ঢাকার। ১৮৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ঢাকার ইনিংস শেষ হয় ১৫৯ রানে। ফলে ২৭ রানের দারুণ এক জয়ে টেবিলের তিন নম্বরে উঠে আসলো তামিমের দল।
চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিং করে ঢাকাকে ১৮৭ রানের লক্ষ্য দেয় বরিশাল। জবাবে খেলতে নেমে পাওয়ার প্লের মধ্যেই টপ অর্ডার চার ব্যাটারকে হারিয়ে ফেলে ঢাকা। ৯ মাস পর ইনজুরি কাটিয়ে ফেরা সাইফউদ্দিন দারুণ পারফরম্যান্স করছেন। আজ দারুণ ব্যাটিংয়ের পর বোলিং করতে এসে প্রথম ওভারেই দুই উইকেট নিয়ে ঢাকার মেরুদণ্ড ভেঙে দেন এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার।
টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক নাঈম শেখকে (১০) ফেরান দক্ষিণ আফ্রিকার স্পিনার কেশভ মহারাজ। এরপর প্রথমবার বিপিএলে খেলতে নামা ইংলিশ উইকেট কিপার ব্যাটার অ্যাডাম রসিংটন (৪), সাইফ হাসান (২) এবং শেন উইলিয়ামস (১২) দ্রুত ফিরে গেলে বিপদে পড়ে যায় ঢাকা। শুরুর প্রভাব থেকেছে মিডল অর্ডারেও। একমাত্র অ্যালেক্স রস ছাড়া বরিশালের বোলারদের বিপক্ষে কেউই প্রতিরোধ গড়তে পারেননি। একপ্রান্ত আগলে রেখে একাই লড়াই করেছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৮৯ রানে অপরাজিত থাকেন অ্যালেক্স। ৪৯ বলে ৫ চার ও ৭ ছক্কায় নিজের ইনিংসটি সাজান অস্ট্রেলিয়ান এই ক্রিকেটার।
বরিশালের হয়ে ২৬ রান খরচায় তিনটি উইকেট নিয়েছেন খালেদ আহমেদ। ৩১ রানে তিন উইকেট নেন সাইফউদ্দিন। মহারাজ ও ওবেড ম্যাককয় একটি করে উইকেট নিয়েছেন।
তামিমের আসর সেরা ইনিংস আর মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের ঝড়ো ফিনিশিংয়ে ঢাকার বিপক্ষে ১৮৬ রান সংগ্রহ করে বরিশাল। বরাবরের মতো শুরুতে দেখেশুনেই খেলছিলেন। প্রথম ১৩ বলে করেন ৬ রান। পঞ্চম ওভার থেকে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শুরু করেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। ওই ওভারের প্রথম বলে আরাফাত সানিকে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কায় শুরু তামিমের। এরপর একই ওভারের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে চার ও ছক্কা মারেন তিনি। এক বল ডট খেলে পঞ্চম বলে সোজা ছক্কা মারেন তিনি। সানির করা ওই ওভার থেকে তিনি একাই নেন ২১ রান। সেই শুরু, এরপর প্রতি ওভারেই তামিমের রোষানলে পড়তে হয় ঢাকার বোলারদের।
ওপেনিংয়ে ৭৬ রানের জুটির পর আহমেদ শেহজাদ বিদায় নেন। শেহজাদ ২৪ রান করে বিদায় নিলে উইকেটে আসেন সৌম্য সরকার। তাকে নিয়ে তাণ্ডব চালাতে থাকেন তামিম। একপ্রান্তে সৌম্য ধীরস্থির ভাবে খেললেও তামিম ছিলেন আগ্রাসী ভূমিকায়। তাতে ৩৪ বলে ৫ চার ও ৩ ছয়ের মারে ফিফটি তুলে নেন চট্টগ্রামের ঘরের ছেলে। হাফ সেঞ্চুরি ছোঁয়ার পর তাণ্ডব আরও বাড়তে থাকে। শেষ পর্যন্ত আলাউদ্দিন বাবুর স্লোয়ারে সাইফ হাসানের হাতে তালুবন্দি হয়ে সাজঘরে ফেরেন তামিম। ৪৫ বলে ৭ চার ও ৪ ছক্কায় ৭১ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। দারুণ এই ইনিংসে ম্যাচ সেরার পুরস্কারটি পেয়ে যান বরিশালের এই অধিনায়ক।
১২৪ রানের মাথায় তামিম আউট হলে বরিশালের রানের চাকা মন্থর হয়ে যায়। মাহমুদউল্লাহ (১৩), মুশফিক (১), মিরাজ (০) দ্রুত বিদায় নিলে বড় সংগ্রহের সম্ভাবনা ফিকে হয়ে যায়। তবে শেষ দিকে শোয়েব মালিকের সঙ্গে জুটি বেঁধে ঝড় তোলেন সাইফউদ্দিন। মাত্র ৬ বলে ২ চার ও ২ ছয়ের মারে ২৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন এই অলরাউন্ডার। আর তাতেই ৬ উইকেট হারিয়ে ১৮৬ রানের বড় সংগ্রহ পায় বরিশাল।
আলাউদ্দিন বাবু ৩টি, তাসকিন আহমেদ ২টি ও শরিফুল ইসলাম ১টি উইকেট নেন।