নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের নতুন শিক্ষাপদ্ধতিতে মেধাবী একটি জাতি তৈরি হবে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, নতুন শিক্ষাব্যবস্থা পরিবর্তনের কোনও পরিকল্পনা নেই। তবে নতুন পদ্ধতি আরও কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করার বিষয়ে শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তরে জাসদের একেএম রেজাউল করিম তানসেনের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে প্রশ্ন উপস্থাপিত হয়।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যে শিক্ষাপদ্ধতি চালু হচ্ছে, তাতে মেধাবী জাতি তৈরি হবে। নতুন শিক্ষাব্যবস্থা মূলত নতুন শিক্ষাক্রমের ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত হচ্ছে, যা আমাদের আগামী প্রজন্মকে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থাকার সঙ্গে সঙ্গে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব, বিশ্বায়ন, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলা এবং মধ্যম আয়ের দেশ থেকে উন্নত দেশে রূপান্তরের পথকে সুগম করবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, অতীতে মুখস্থনির্ভর ও সনদসর্বস্ব শিক্ষাব্যবস্থা থেকে বের হয়ে বর্তমানে যোগ্যতাভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যুগের চ্যালেঞ্জগুলো আরও কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে পারবে। শিক্ষার্থীরা মেধাশূন্য নয়, নতুন শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরা আরও দক্ষ ও যোগ্য হয়ে উঠবে। নতুন শিক্ষাব্যবস্থা পরিবর্তনের কোনও পরিকল্পনা নেই। তবে নতুন পদ্ধতি কীভাবে আরও কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, তা নিয়ে শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য মশিউর রহমান সজলের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমে পরীক্ষা নেই, তেমন নয়। আগের মুখস্থনির্ভর ও সনদসর্বস্ব শিক্ষাব্যবস্থা থেকে বের হয়ে আসার জন্য নতুন শিক্ষাব্যবস্থা ও মূল্যায়ন পদ্ধতি চালু করা হয়েছে, যা প্রচলিত পরীক্ষার ধারণা থেকে ভিন্ন। ফলে আগের মতো মুখস্থনির্ভর পরীক্ষা না থাকার কারণে অনেকেই নতুন পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেই বলে অভিযোগ করছেন।
নতুন শিক্ষাক্রমে ধারাবাহিক ও সামষ্টিক মূল্যায়নের সমন্বয়ে একটি আধুনিক কার্যকর মূল্যায়ন পদ্ধতি চালু করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এখানে লিখিত মূল্যায়নের পাশাপাশি সমস্যা সমাধান, একক কাজ, দলীয় কাজের মূল্যায়ন করা হচ্ছে। উপস্থাপন ও যোগাযোগ সক্ষমতা, সহযোগিতা, নেতৃত্ব, অর্জিত জ্ঞানের প্রয়োগ ইত্যাদি পর্যবেক্ষণসহ আরও নানা উপায়ে শিখন মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম-১১ আসনের এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী জানান, সরকার গত ১৫ বছরে ৮২৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারিকরণ করছে। এর মধ্যে ৫৪টি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ৩৭৪টি কলেজ, ৩৪৭টি স্কুল এবং ৪৯টি কারিগরি প্রতিষ্ঠান।
নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের প্রশ্নের জবাবে মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, জেএসসি এবং পিএসসি সমাপনী পরীক্ষা পুনরায় চালু করার কোনও পরিকল্পনা বর্তমান সরকারের নেই।
চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী বলেন, বর্তমানে দেশে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৫১ হাজার ২৬। নতুন বিধিমালার আওতায় বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধনের আওতায় আনার কার্যক্রম চলমান। তবে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণের কোনও পরিকল্পনা সরকারের নেই।