নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম-ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে ও বাসা বাড়িতে গ্যাস সরবরাহ না থাকায় তীব্র উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। সংগঠনটির অভিযোগ, সরকারের ভুলনীতি ও দুর্নীতি এই সংকট তৈরি করেছে।
রোববার (২১ জানুয়ারি) সংবাদ মাধ্যমে সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য লুনা নূরের পাঠানো এক বিবৃতিতে এ ক্ষোভ জানান দলের সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।
বিবৃতিতে তারা বলেন, সরকারের ভুলনীতি ও জ্বালানি ক্ষেত্রে দুর্নীতি এসব সংকট তৈরি করেছে। গ্যাস আমাদের দেশের নিজস্ব সম্পদ। স্থলভাগে ও সমুদ্রে এই গ্যাস আছে। অথচ নিজস্ব গ্যাস অনুসন্ধান উত্তোলনে কার্যকর ভূমিকা না নিয়ে ব্যবসায়ী ও কমিশনভোগীদের স্বার্থে গ্যাস খাতকে আমদানিনির্ভর খাতে পরিণত করা হয়েছে।
বারবার গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। গ্যাস বিল দেওয়ার সময় সাধারণ জনগণের টাকায় গ্যাস উন্নয়ন তহবিল গঠন করা হয়েছিল। ওই উন্নয়ন তহবিলের টাকা দিয়েও গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের কাজ করা যেত। সরকার গ্যাস উত্তোলনে কার্যকর ব্যবস্থা না নিয়ে কিছু ব্যবসায়ী ও কমিশনভোগীদের সুবিধা দেওয়ার জন্য গ্যাস খাতকে আমদানির নির্ভর খাতে পরিণত করেছে। গ্যাস উন্নয়ন তহবিলের টাকা গ্যাস আমদানিতে ব্যবহার করা হয়েছে। জ্বালানি খাতে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি ঢাকতে ‘দায়মুক্তি আইন’ পর্যন্ত করা হয়েছে। আজ তাই এ সংকটের দায় সরকারকে নিতে হবে।
দাবি জানিয়ে তারা বলেন, এসব ভুলনীতি ও দুর্নীতির সাথে জড়িতদের চিহ্নিত ও বিচার করতে হবে। পাশাপাশি জ্বালানি খাতের দায় মুক্তি আইন বাতিল ও গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক করতে দেশপ্রেমিক বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে টাস্ক ফোর্স গঠন করে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
এই সংকটের মধ্যেও গ্যাসের মিটার ভাড়া বাড়ানো, গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির পাঁয়তারা, বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির পাঁয়তারার খবরের তীব্র নিন্দা জানিয়ে সিপিবির শীর্ষ দুই নেতা বলেন, একদিকে গ্যাস দিতে না পারলেও দাম বাড়িয়ে জনগণের পকেট কাটা… জনগণ কোনোভাবেই সহ্য করবে না।
দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে লোডশেডিংয়ের সতর্কতা দিয়ে যে কথা বলা হচ্ছে, তাকে বিদ্যুতের গল্প শোনানো ও দেশবাসীর সাথে বিদ্যুৎ নিয়ে মশকরার শামিল ছাড়া কিছু বলা যায় না। গ্যাস-বিদ্যুৎসহ জনজীবনের সংকট দূর করতে এবং দুঃশাসন হটিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সংগ্রাম করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তারা।