আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে বাংলাদেশের জনগণের গণতন্ত্রিক চর্চার আগ্রহ ও তা পূরণের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সহায়ক অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি বলে জানিয়েছেন দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের (এনএসসি) স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশনের সমন্বয়ক অ্যাডমিরাল জন কিরবি।
স্থানীয় সময় বুধবার (১০ জানুয়ারি) হোয়াইট হাউসে অনুষ্ঠিত এক ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনকে একতরফা উল্লেখ করে বিরোধী দলের ওপর সরকারের অব্যাহত দমননীতির প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান জানতে জন কিরবিকে প্রশ্ন করা হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে কিরবি বলেন, অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন এবং গণতান্ত্রিক ধারার প্রতি বাংলাদেশের নাগরিকদের আকাঙ্ক্ষা পূরণে যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সমর্থনের কোনো পরিবর্তন হয়নি। গণতান্ত্রিক চর্চা ও ধারা সমুন্নত রাখতে বিশ্বব্যাপী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা যুক্তরাষ্ট্র অব্যাহত রেখেছে। সেই সঙ্গে মুক্ত এবং গতিশীল গণতন্ত্র নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে সব ধরনের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে ওয়াশিংটন।
প্রেস সেক্রেটারি কারিন জ্যঁ-পিয়েরে প্রশ্নের জন্য আহ্বান জানালে ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ উত্থাপন করে এক সাংবাদিক জানতে চান, বাংলাদেশের একতরফা নির্বাচন সমাপ্ত হয়েছে। নির্বাচন ঘিরে যেভাবে বিরোধী দলের ওপর আক্রমণ-গ্রেফতার-দমননীতি প্রয়োগ করা হয়েছে তাতে নিন্দা জানিয়েছে গোটা বিশ্ব। সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এই নির্বাচনের সমালোচনা করে এক প্রতিবেদনে বলেছে, বিরোধী দলের ওপর সরকারের পৈশাচিক আক্রমণ। দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাইডেন প্রশাসনের বিশ্বব্যাপী সুষ্ঠু গণতন্ত্রিক ধারা প্রচারের সীমাবদ্ধতা দেখিয়ে দিল বাংলাদেশ। এর আগে আপনি বলেছিলেন- বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলনে যা করা দরকার তা-ই করবেন। এরই ধারাবাহিকতায় নির্বাচনের পূর্বে আপনারা ভিসানীতি ঘোষণা করেছিলেন। বিশ্বব্যাপী বাইডেন প্রশাসনের গণতন্ত্র প্রচারের চেষ্টা বাংলাদেশে বাধাগ্রস্ত হয়েছে মর্মে যে সমালোচনা উঠেছে, সে বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখছেন?
এমন প্রশ্নের জবাবে কিরবি বলেন, অবশ্যই আমরা এখনো বিশ্বজুড়ে সক্রিয় এবং গতিশীল গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকতাকে সমর্থন করি। বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণের প্রত্যাশার জায়গা থেকে আমাদের কোনো নড়চড় হয়নি। আমাদের সেই প্রত্যাশাটি হলো- একটি অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করা।
দ্বিতীয় এক প্রশ্নে ওই সংবাদকর্মী জানতে চান, নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম এবং কংগ্রেসনাল গোল্ড মেডেলেও ভূষিত হয়েছেন। (ইংরেজি) নববর্ষের প্রথম দিনে তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন বাংলাদেশের একটি আদালত। এটা সবার ধারণা যে, ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিশোধ পরায়ণতার শিকার হয়েছেন ড. ইউনূস। প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম সম্মাননাপ্রাপ্ত এবং এই হোয়াইট হাউসে একাধিকবার আসা ড. ইউনূসের এই রায়ের বিষয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অবগত কিনা?
সরাসরি উত্তর দেওয়া এড়িয়ে গিয়ে জন কিরবি বলেন, তিনি এই প্রশ্ন গ্রহণ করেছেন এবং পরবর্তী সময়ে লিখিতভাবে তার উত্তর জানাবেন।