নিজস্ব প্রতিবেদক: বঙ্গোপসাগর সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে। রোববার (২৬ মে) সন্ধ্যা ৬টার পর এটি বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করেছে।
আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের মূল অংশ বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে। রাত ৯/১০টা নাগাদ এর মূল অংশ অতিক্রম করতে পারে।
একই সঙ্গে মোংলাও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ১০ এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরে ৯ নম্বর মহাবিপদৎ বহাল রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এর আগে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১৩ নম্বর বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ওপর দিয়ে অতিক্রম করতে যাচ্ছে। সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে পরবর্তী তিন থেকে চার ঘণ্টার মধ্যে এটি উপকূল অতিক্রম করবে। ঘূর্ণিঝড়টি আজ বিকাল তিনটায় চট্টগ্রাম থেকে ৩২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার থেকে ৩১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা থেকে ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা থেকে ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।
এটি আরো ঘনীভূত হয়ে সোজা উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
উপকূল অতিক্রমের সময় স্বাভাবিক জোয়ারের চাইতে ৮ থেকে ১২ ফুট উচ্চতার বেশি জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। আর এতে ক্ষয়ক্ষতিও বেশি হতে পারে সেই শঙ্কায় মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এছাড়া খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, বরিশাল, পিরোজপুর, ভোলা, ঝালকাঠি, বরগুনা, পটুয়াখালী এবং তৎসংলগ্ন দ্বীপ ও চরসমূহকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখানো হয়েছে। অপরদিকে চাঁদপুর, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের দ্বীপ ও চরসমূহকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখানো হয়েছে। একইসঙ্গে এসব এলাকায় স্বাভাবিক জোয়ারের চাইতে ৮ থেকে ১০ ফুট উচ্চতার বেশি জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয় বিশেষ বুলেটিনে। জোয়ারের পাশাপাশি ভারী বর্ষণের সতর্কতাও জারি করা হয়েছে। এতে চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সিলেট এলাকায় পাহাড় ধসের শঙ্কাও করা হয়েছে।
এদিকে ঝড়টি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপ ও পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার মধ্যবর্তী এলাকা দিয়ে উঠার পর বরিশালের পূর্ব পাশ দিয়ে মেঘনা নদী অতিক্রম করবে। পরবর্তীতে চাঁদপুর ও কুমিল্লার হোমনার পাশ দিয়ে বাঞ্চারামপুরের কাছে এসে সোজা ডান দিকে (পূর্ব দিকে) টার্ন নিয়ে আখাউড়া হয়ে ভারতের আগরতলায় গিয়ে পৌছাবে।