আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বৃহস্পতিবার রাতে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে মার্কিন-ব্রিটিশ বাহিনীর ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রায় উল্লম্ফণ ঘটেছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দামে।
অপরিশোধিত তেলের দুই বেঞ্চমার্ক ব্রেন্ট ক্রুড এবং ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুড— শতাংশ হিসেবে উভয়ের দাম ব্যারেলপ্রতি বেড়েছে চার শতাংশের বেশি।
রয়টার্সের তথ্য অনুসারে, শুক্রবার প্রতি ব্যারেল (এক ব্যারেল = ১৫৯ লিটার) ব্রেন্ট ক্রুড বিক্রি হয়েছে ৮০ দশমিক ৫৭ ডলার এবং প্রতি ব্যারেল ডব্লিউটিআই ক্রুড বিক্রি হয়েছে ৭৫ দশমিক ০৭ ডলারে।
আগের দিন বৃহস্পতিবারের তুলনায় এই দিন ব্রেন্ট ক্রুডের দাম বেড়েছে ৩ দশমিক ১৬ ডলার বা ৪ দশমিক ১ শতাংশ এবং ডব্লিউটিআই’র দাম বেড়েছে ৩ দশমিক ৫ ডলার বা ৪ দশমিক ২ শতাংশ।
জ্বালানি পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান এমএসটি মারকুইয়ের বিশ্লেষক সাউল ক্যাভোনিক রয়টার্সকে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক বাণিজ্যে লোহিত সাগর-হরমুজ প্রণালী খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি এই রুটে অস্থিরতা শুরু হয়— তাহলে তা আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।’
‘এমনকি ১৯৭০ সালে জ্বালানি তেলের দামে যে অস্বাভাবিক উল্লম্ফণ ঘটেছিল এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে প্রাকৃতির গ্যাসের দাম যে হারে বেড়েছে, তার চেয়েও বড় হবে এই প্রভাবের মাত্রা,’ বলেন সাউল ক্যাভোনিক।
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর সামরিক অভিযানের প্রতিবাদ হিসেবে গত দুই মাস আগে থেকে লোহিত সাগরে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কিত বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে লক্ষ্যবস্তু বানানো শুরু করে ইয়েমেনের অর্ধেক অঞ্চল নিয়ন্ত্রণকারী হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠী। পেন্টানগনের তথ্য অনুযায়ী, গত দুই মাসে লোহিত সাগরে মোট ২৭ বার বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে হুথিরা।
গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের যুদ্ধজাহাজ লক্ষ্য করে ২০টি ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠী। তারপরই সেদিন দিবাগত রাতে ইয়েমেনে হুথিদের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা চালিয়েছে লোহিত সাগরে টহলরত মার্কিন ও ব্রিটিশ বাহিনী।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঘোষণা দিয়েছেন— বৃহস্পতিবারের হামলার পরেও যদি যদি লোহিত সাগর রুটের বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে হুথিরা হামলার লক্ষ্যবস্তু বানায়, তাহলে ফের ইয়েমেনে অভিযান চালানো হবে।
এদিকে রয়টার্স জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারের হামলার পর আন্তর্জাতিক শিপিং জায়ান্ট মারেস্কসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান লোহিত সাগর রুটে নিজেদের জাহাজ চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে।