নিজস্ব প্রতিবেদক: উত্তরায় গাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র মামলায় বিচারিক (নিন্ম) আদালতের দেওয়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মোহাম্মদ সাহেদকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সাহেদের করা আপিল মঞ্জুর করে বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাস ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী। সাহেদের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক। তাদের সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট পলাশ চন্দ্র রায় ও অ্যাডভোকেট সালাম আশরাফ চৌধুরী।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, উদ্ধার হওয়া অস্ত্রটি আসল নয়। সেখানে লেখা মেড ইন জাপান ও চায়না। এরকম অস্ত্র কখনো তৈরি হতে পারে না। আর অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে সাহেদ যে সিটে বসেন তার সামনের সিট থেকে। কিন্তু গাড়ির চাবি উদ্ধার করা হয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কার্যালয় থেকে। রাষ্ট্রপক্ষ বিষয়টি যথাযথভাবে প্রমাণ করতে পারেনি। তাই আদালত তার আপিল মঞ্জুর করে খালাস দিয়েছেন।
২০২০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর অস্ত্র মামলায় সাহেদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ। ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯ (এ) ধারায় করা মামলায় সাহেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এছাড়া অস্ত্র আইনের ১৯ (এফ) ধারায় তার সাত বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। উভয় সাজা একসঙ্গে চলবে বলে তখন আদালত রায়ে উল্লেখ করেন। ওই বছরের ৬ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখায় অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানে ভুয়া করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট, করোনা চিকিৎসার নামে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ নানা অনিয়ম উঠে আসে। এ ঘটনার পর পালিয়ে যান সাহেদ। ১৫ জুলাই সাহেদকে সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গ্রেফতার করে র্যাব। পরে তাকে হেলিকপ্টারে সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় আনা হয়।
করোনা পরীক্ষার নামে ভুয়া রিপোর্টসহ বিভিন্ন প্রতারণার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ১৬ জুলাই সাহেদকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। এরপর ১৯ জুলাই তাকে নিয়ে উত্তরার বাসার সামনে অভিযান চালায় ডিবি পুলিশ। সেখানে সাহেদের নিজস্ব সাদা প্রাইভেটকার থেকে পাঁচ বোতল বিদেশি মদ, ১০ বোতল ফেনসিডিল, একটি পিস্তল এবং একটি গুলি উদ্ধার করা হয়। এরপর উত্তরা পশ্চিম থানায় অস্ত্র ও মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা করা হয়।
৩০ জুলাই ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে সাহেদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনের মামলায় চার্জশিট দাখিল করা হয়। এরপর ২৭ আগস্ট তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। সাহেদের বিরুদ্ধে সারাদেশে অর্ধশত মামলা রয়েছে। এর বেশির ভাগই প্রতারণার অভিযোগে করা।