আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিশ্বের বৃহত্তম জ্বালানি তেল রপ্তানিকারক দেশ সৌদি আরব তার এশীয় ক্রেতাদের জন্য অপরিশোধিত তেলের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম প্রতি ব্যারেলে কমেছে ১ ডলারেরও বেশি।ব্লুমবার্গ ও রয়টার্সের তথ্য অনুসারে, সোমবার আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেল বিক্রি হয়েছে ৭৭ দশমিক ৮০ ডলারে এবং প্রতি ব্যারেল ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুড তেল বিক্রি হয়েছে ৭২ দশমিক ৮১ ডলারে।
আগের দিন রোববারের তুলনায় ব্যারেল প্রতি ব্রেন্ট ক্রুডের দাম কমেছে ১ দশমিক ২১ ডলার এবং ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম কমেছে ১ দশমিক ৩৫ ডলার এবং গড়ে উভয় বেঞ্চমার্কের দাম কমেছে ১ ডলারের বেশি।
এদিকে রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি জানিয়েছে, এশীয় ক্রেতাদের জন্য নিজেদের অপরিশোধিত তেলের ফ্ল্যাগশিপ ব্র্যান্ড আরব লাইট ক্রুডের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদির রাষ্ট্রায়ত্ত তেল উত্তোলন কোম্পানি আরামকো। আরামকোর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ফেব্রুয়ারির শেষ পর্যন্ত এশীয় ক্রেতারা প্রতি ব্যারেল আরব লাইট ক্রুডে ১ দশমিক ৫ ডলার থেকে ২ ডলার পর্যন্ত ছাড় পাবেন।
রোববার আরামকো এই সিদ্ধান্ত জানানোর পর সোমবারই আন্তর্জাতিক বাজারে কমেছে অপরিশোধিত তেলের দাম।
জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, হামাস ও ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধ ও তার জেরে লোহিত সাগরে বিভিন্ন বাণিজ্যিক জাহাজের ওপর হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হামলার জেরে এশীয় ক্রেতারা যেন অন্য কোনো তেল উৎপাদনকারী দেশের প্রতি ঝুঁকে না পড়ে— সেজন্যই এই মূল্যছাড় দিয়েছে সৌদি।
ডলারের দাম লাগামহীন ভাবে বাড়তে থাকায় উন্নয়নশীল এবং উন্নত দেশগুলো গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তেল কেনা কমিয়েছে, যার ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে মন্দাভাব।
এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে গত বছর থেকে তেলের দৈনিক উত্তোলন হ্রাসের সিদ্ধান্ত নেয় জ্বলানি তেল উত্তোলনকারী দেশগুলোর জোট ওপেক প্লাস। কিন্তু একই সময় যুক্তরাষ্ট্র তার অভ্যন্তরীণ তেলের উত্তোলন বৃদ্ধি করায় বাজারের মন্দা পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হয়নি।
তেলের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের একটি বড় রুট লোহিত সাগর। বিশ্লেষকদের মতে, বাজার স্বাভাবিক করার গুরুত্বপূর্ণ একটি শর্ত হলো লোহিত সাগরে চলাচলকারী বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
সূত্র : রয়টার্স, ব্লুমবার্গ, আরটি নিউজ