নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্যাংক লুট, ঋণখেলাপি ও অর্থপাচারকারীদের তালিকা প্রকাশের দাবিতে আল্টিমেটাম দিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে তালিকা প্রকাশ করা নাহলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে সমাবেশ ও বিক্ষোভের ডাক দেয় রাজনৈতিক দলটি।
মঙ্গলবার (২১ মে) বাংলাদেশ ব্যাংক সংলগ্ন সমাবেশ থেকে এ আল্টিমেটাম দিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন।
এর আগে ব্যাংক লুটেরা, ঋণখেলাপি ও অর্থপাচারকারীদের তালিকা প্রকাশের দাবিতে গণসংহতি আন্দোলনের বিক্ষোভ সমাবেশে বাঁধা দেয় পুলিশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ডেকে শেষ পর্যন্ত শাপলাচত্বর সংলঘ্ন ফুটওভারব্রীজের আগে সমাবেশ করেন দলটির নেতার। সমাবেশের আগে পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের ধস্তাধস্তি হয়।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। তারা নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত আমরা ব্যাংক ক্ষতিগ্রস্ত করে ফেলতে পারি। ব্যাংক তো ভেতর থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আছে। ব্যাংক ভেতর থেকে ফোকলা হয়ে গেছে। যারা এগুলো করছে পুলিশ তাদেরই নির্দেশ পালন করছে।
তিনি বলেন, একটা সরকার যখন বৈধ হয় তখনই আইন মানার প্রশ্ন আসে। এই সরকার অবৈধ আর তাদের নির্দেশও অবৈধ। যেখানে জনগণের মতের গুরুত্ব থাকে না সেটা অবৈধ সরকার। দেশের সমস্ত সম্পদ লুট হয়ে যাচ্ছে। কারা লুট করছে তাদের নাম আমরা জানতে চাই। যদি আপনারা সেই ব্যবস্থা না করেন আমরা আবার আসব। গত ১৫ বছরে ঋণ খেলাপি কত বেড়েছে এটা জানাতে হবে। আপনারা বলেন এটা দেড় লক্ষ কোটি টাকা, কিন্তু এটা প্রকৃতপক্ষে ৪ লাখ কোটি টাকা।
জোনায়েদ সাকি বলেন, ব্যাংকের এমডিরা মিলেমিশে ঋণ নিয়ে খেলাপি করে। পরে আবার পুনঃতফশিলের কথা বলে নামমাত্র কিছু টাকা ফেরত দিয়ে আবার ঋণ নেয়। এভাবে দেশের টাকা লুট করে নিয়ে আমাদের পকেট খালি করে দিচ্ছে। তারা দুর্বল আর সবল ব্যাংককে এক করে মিলিয়ে দিচ্ছে। দুর্বল ব্যাংক মানে হচ্ছে ওই ব্যাংকে আর কোনো টাকা নাই। সেই ব্যাংক বসে পড়বে। আপনার আমার টাকা তারা নিয়ে গেছে। তাই ঋণ খেলাপিদের তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশ করুক। বাংলাদেশের শ্রমিকের কষ্টে অর্জিত টাকা আর দেশে আসে না। এগুলো বিদেশে পাচার হয়ে গেছে।
গণ সংহতি আন্দোলনের এ নেতা বলেন, রিজার্ভ নিয়ে বড়াই করতেন যে ৪৮ বিলিয়ন ডলার। আর দেখা গেল যে, ব্যবহার যোগ্য রিজার্ভ মাত্র ১৩ বিলিয়ন ডলার। সামনে যে দিন আসছে এতে ৩ মাসের আমদানি অর্থও থাকবে না। তারা লুটপাট করবে আর সাধারণ মানুষ তা ভোগ করবে এটা আমরা মেনে নেব না।
তিনি আরও বলেন, বিদ্যুতের যে দাম এতে করে জনগণকে নিয়ে ফন্দি আঁটছে। ৮০ % ভর্তুকি হচ্ছে ক্যাপাসিটি চার্জ। আমার আপনার টাকা নিয়ে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে ভর্তুকি দিচ্ছে।
তিনি বলেন, এস আলমের ৭টি ব্যাংক ছিল কিছুদিন আগে ন্যাশনাল ব্যাংককে তুলে দিল। এস আলম আরও অনেক ব্যাংক পরিচালনা করে। এস আলম মানেই হচ্ছে শেখ হাসিনা সরকার। এস আলম নিয়ে আদালতে গেলেও তাদের বিরুদ্ধে মামলা নেন না আদালত। এভাবেই চলছে এই অবৈধ সরকারের কার্যক্রম। বেনজির এস আলমের লোকেরাই সুবিধা নিচ্ছে। আর এদের সরদার হচ্ছে শেখ হাসিনা। সে ক্ষমতায় থাকতেই এমন সব পীর মুরিদ তৈরি করছে।
৩০ জুনের মধ্যে ঋণ খেলাপিদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। নাহলে আমরা আবার আসব। তখন আমরা আরও বেশি সংখ্যায় আসব। হয় বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মকর্তা কর্মচারীরা থাকবে না হয় আমাদের দাবি মেনে নিতে হবে বলে জানান জোনায়েদ সাকি।