অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক: সংকোচনমূলক মুদ্র্রানীতির অংশ হিসেবে এক দিন মেয়াদী রেপোর সুদহার ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে সাড়ে ৮ শতাংশ করা হয়েছে।
গতকাল সুদহার বাজারভিত্তিক করার দিনই এ সিদ্ধান্ত জানাল বাংলাদেশ ব্যাংক।
পাঁচ মাসের ব্যবধানে আবারও নীতি সুদহার হিসেবে পরিচিত রেপো বাড়িয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সার্কুলার দিয়ে বলেছে, ‘‘মনিটারি পলিসি কমিটির তৃতীয় সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ওভারনাইট রেপো নীতি সুদহার বিদ্যমান শতকরা ৮ শতাংশ থেকে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৮.৫০ শতাংশ নির্ধারণ করা হল।’’
নতুন এ সুদহার আজ থেকেই কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এর ফলে তারল্যে সংকটে পড়া কোনো বাণিজ্যিক ব্যাংক প্রয়োজনে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে যে টাকা ধার করবে, সেটির সুদহার বাড়বে। অর্থাৎ সংকোচনমূলক মুদ্রা সরবরাহে আরও চাপ বাড়ালো বাংলাদেশ ব্যাংক।
এদিনই সুদহার বাজারভিত্তিক করার অংশ হিসেবে ব্যাংক ঋণের সুদহার সীমা ‘স্মার্ট (সিক্স মান্থস মুভিং অ্যাভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল-স্মার্ট) তুলে নেওয়া হয়। এতে এক দিনেই ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে ৭ টাকা। প্রধান বিদেশি মুদ্রা প্রতি ডলারের দাম ধরা হয় ১১৭ টাকা।
মূল্যস্ফীতির চাপ সামাল দেওয়ার চলমান উদ্যোগের মধ্যে বাজারে অর্থের যোগান কমাতে সর্বশেষ গত জানুয়ারিতে মুদ্রানীতি ঘোষণায় নীতি সুদহার বাড়িয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তখন সুদহার ৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে ২৫ বেসিস পয়েন্ট বেড়ে ৮ শতাংশ করা হয়েছিল।
এক দিন মেয়াদী রেপোর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিশেষ রেপো সুদহারের (স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটি-এসএলএফ) করিডোরের ঊর্ধ্বসীমা ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে; এখন যা ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ।
এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি এ সুদহার ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছিল। আর সুদহার করিডোরের নিম্নসীমা রিভার্স রোপো সুদহার (স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি-এসডিএফ) বিদ্যমান ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে। এতদিন যা ছিল সাড়ে ৬ শতাংশ। বাজারে উদ্বৃত্ত টাকা থাকলে বাংলাদেশ ব্যাংক রিভার্স রেপোর মাধ্যমে টাকা তুলে নেয়।
গত ১৭ জানুয়ারি এসডিএফ সুদহার ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে ৭৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে সাড়ে ৬ শতাংশ করা হয়েছিল। নীতি সুদহারের ঊর্ধ্বসীমা ও নিম্ন সীমার মধ্যে ব্যবধান ১৫০ শতাংশ পয়েন্ট অপরির্তীত রেখেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
অর্থাৎ নীতি সুদহার সাড়ে ৮ শতাংশের সঙ্গে সর্বোচ্চ ১৫০ বেসিস পয়েন্ট যোগ করে এসএলএফ সুদহার ও নিচে ১৫০ বেসিস পয়েন্ট বিয়োগ করে এসডিএফ সুদহার নির্ধারণ করা হবে।
তারল্যের প্রয়োজনে বাণিজ্যিক ব্যাংক যখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার করে, তখন তার সুদহার ঠিক হয় রেপোর মাধ্যমে। আর রিভার্স রেপোর মাধ্যমে বাংকগুলো তাদের উদ্বৃত্ত অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখে বা কেন্দ্রীয় ব্যাংক চাইলে বাজার থেকে অতিরিক্ত তারল্য তুলে নিতে পারে।
এসময় রিভার্স রোপো সুদহার প্রযোজ্য হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে যে সুদহারে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ দেয়, তাকে বলে ব্যাংক রেট। এবার ৪ শতাংশের ব্যাংক রেটে পরিবর্তন আনা হয়নি।