নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকালে শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ফয়সল আতিক বিন কাদেরের আদালত দুজনকেই ৫ হাজার টাকা করে মুচলেকায় জামিনের এই আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এদিন আসামিদের পক্ষে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, মো. আসাদুজ্জামান, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, মাসুদ আহমেদ তালুকদার জামিন শুনানি করেন। আসামিদের অসুস্থতা, বয়স, সামাজিক মর্যাদা বিবেচনা করে জামিন চান তারা। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ৫ হাজার টাকা মুচলেকা নিয়ে আদালত তাদের জামিন মঞ্জুরের আদেশ দেন।
পরে জয়নুল আবেদীন বলেন, এই দুই আসামির কারামুক্তিতে বাধা ছিল এই মামলাটি। তবে জামিনের আদেশ হওয়ায় আশা করছি, এই দুই নেতার কারামুক্তিতে এখন আর কোনও বাধা নেই।
জয়নুল আবেদীন মেসবাহ নামে আসামিপক্ষের আরেক আইনজীবী জানান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে ১১টি মামলা ছিল। সবগুলোতেই তিনি জামিন পেয়েছেন। আর আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে ছিল ১০টি মামলা, তিনিও সব মামলায় জামিন পেয়েছেন। অন্য কোনও ঝামেলা না থাকলে তাদের কারামুক্তিকে বাধা নেই বলেই ধারণা করছি।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি একই আদালতে মির্জা ফখরুল ও আমির খসরুর জামিন চেয়ে আবেদন করেন তাদের আইনজীবীরা। ওই আবেদনের ওপর শুনানির জন্য বুধবার ১৪ ফেব্রুয়ারি তারিখ ধার্য করা হয়।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীর কাকরাইলে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা, যানবাহন ভাঙচুর, পুলিশের ওপর হামলা ও কাজে বাধা এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে আতঙ্ক ও ত্রাস সৃষ্টির দায়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অন্তত ১০টি মামলা দায়ের করা হয়।
এর মধ্যে একটি মামলায় বিএনপির ৭২ জন নেতার নাম উল্লেখ করে কাকরাইল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মো. মোফিজুর রহমান বাদী হয়ে রমনা মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। আরেকটি মামলায় ৫৯ জন বিএনপি নেতার নাম উল্লেখ করে সিদ্ধেশ্বরী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. সহিদুল ওসমান মাসুম বাদী হয়ে রমনা থানায় মামলা দায়ের করেন। দুটি মামলাই ঘটনার পরদিন ২৯ অক্টোবর রমনা মডেল থানায় দায়ের করা হয়।
গত ২৮ অক্টোবর মির্জা ফখরুলের গুলশানের নিজ বাসা থেকে তাকে আটক করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এরপর প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ভাঙচুরের অভিযোগের মামলায় তাকে আদালতে হাজির করা হলে গত ২৯ অক্টোবর আদালত তার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
গত ২ নভেম্বর দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে গুলশানের বাসা থেকে আমির খসরুকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। পরদিন ৩ নভেম্বর তার ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ৯ নভেম্বর রিমান্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর থেকে তিনিও কারাগারে রয়েছেন।