নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ, জীবন বাংলাদেশ আমার মরণ বাংলাদেশ’ এই গানটি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের প্রিয় ছিল জানিয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, নিজের জীবন দিয়ে তিনি প্রমাণ করেছেন বাংলাদেশ তার সব ছিল।
তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশ কৃষি, তৈরি পোশাক, প্রবাসী আয় এই তিনটি স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। যার ভিত্তি রচনা করেছেন জিয়াউর রহমান। তিনি দেশের উন্নয়নে গ্রামে গ্রামে গিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন। কৃষির সমৃদ্ধির জন্য তিনি খাল ও নদী পুনঃখনন ও গভীর নলকূপ স্থাপনের মাধ্যমে সেচের ব্যবস্থা করেন। উন্নয়নের লক্ষ্যে তিনি নানামুখী প্রকল্প নিয়েছিলেন। এভাবে আল্লাহর মেহেরবানীতে দেশ খাদ্যে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়। এমনকি সেসময় গিনিতে চাল রপ্তানি করা হয়েছিল। বাংলাদেশের উন্নয়নের শুরু হয়েছিল জিয়াউর রহমানের হাত ধরেই।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত জিয়াউর রহমানের ৮৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, জিয়াউর রহমান তার শাসনামলে বিভিন্ন দেশে জনশক্তি রপ্তানি শুরু করেছিলেন। তিনি পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড প্রতিষ্ঠা করেন। অথচ এই দেশে একসময় মানুষ ডাস্টবিনে পশুর সঙ্গে খাবার খেত। কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে গেছিল। কিন্তু এক শিফটের পরিবর্তে দুই শিফটে কাজ শুরু করেন জিয়াউর রহমান। তিনি সব কলকারখানা পর্যায়ক্রমে চালুর মাধ্যমে অর্থনীতিকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করান। অর্থাৎ জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি সব ক্ষেত্রে সফল ব্যক্তি ছিলেন। তিনি অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব। কিন্তু তাকে দেশের জনগণের হৃদয় থেকে মুছে ফেলার চক্রান্ত হয়েছে এখনো হচ্ছে।
এসময় জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিভিন্ন সময় কাজ করার ঘটনা স্মৃতিচারণ করেন নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান দেশের প্রথম মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালে ২৫শে মার্চ যেদিন পাকিস্তানি সেনারা হামলা চালায় এ দেশের মানুষের ওপর, তিনি প্রথম তার অস্ত্র পাকিস্তান সেনাদের মুখে তাক করে বলেছিলেন ‘উই রিভোল্ট’। প্রথম থেকে যুদ্ধের শেষদিন পর্যন্ত দেশকে মুক্ত করে তিনি ঘরে ফিরেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, আজকে ক্ষমতাসীন সরকারের উচিত জিয়াউর রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা থাকা। কিন্তু তারা নির্লজ্জের মতো জিয়াউর রহমানকে নিয়ে অযাচিত মন্তব্য করছে। ঋণ দিয়ে তিনি গার্মেন্টস শিল্প চালু করেছিলেন। বেকারত্ব দূর করতে নানা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছিলেন। ১৯৭৬ সালে মধ্যপ্রাচ্যের ১৬ হাজার কর্মী পাঠিয়ে তিনি প্রথম প্রবাসী কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছিলেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, বিএনপি এখনো মর্যাদা ও শক্তিমত্তার সঙ্গে টিকে আছে। ক্রমান্বয়ে এর কলেবর বাড়ছে। এটাই শহীদ জিয়াউর রহমানের কৃতিত্ব। তার ঘোষণায় দেশের মানুষ একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে সর্বাত্মকভাবে অংশগ্রহণ করে দেশ স্বাধীন করেছেন।
সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন— সংগঠনের মহাসচিব ডা. মো. আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা. মো. মেহেদী হাসান, ডা. আশফাক নবী কনক, পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, বিএনপির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক জেড রিয়াজ উদ্দিন নসু, ড্যাবের সহ-সভাপতি ডা. সিরাজুল ইসলাম, ডা. শহীদুল আলম, ডা. শহীদুর রহমান, ডা. মোস্তাক রহিম স্বপন, কোষাধ্যক্ষ ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, যুগ্ম মহাসচিব ডা. পারভেজ রেজা কাকন, ডা. সায়ীদ মেহবুব উল কাদির, নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের জাহানারা সিদ্দিকা, এ্যামট্যাবের দবির উদ্দিন তুষার, ডা. এমএ কামাল, ডা. জাহানারা লাইজু প্রমুখ।