নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের ৬১টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে মাত্র ৩৪টি ব্যাংক তাদের খেলাপি ঋণের হার ৫ শতাংশের নিচে রাখতে পেরেছে। বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
তথ্য অনুযায়ী, সমাপ্ত ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে এই ৩৪টি ব্যাংকের মধ্যে ১১টির খেলাপি ঋণের হার ৩ শতাংশের কম।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খেলাপি ঋণের হার কম থাকা ব্যাংকগুলোতে সুশাসন বজায় আছে, তাদের পরিচালনা পর্ষদ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করে না। এ কারণে এসব ব্যাংকগুলো আর্থিকভাবে শক্তিশালী হতে পেরেছে।
তারা জানান, যদিও শুধু খেলাপি ঋণের হার কম থাকা সবসময় ভালো আর্থিক অবস্থার নির্দেশ করে না। কারণ নতুন ব্যাংকগুলো বড় আকারের ঋণ বিতরণ করতে পারেনি, তাই অন্তত তাদের খেলাপি ঋণের হার কম হওয়াটা স্বাভাবিক।
সবচেয়ে কম খেলাপি ঋণে থাকা ১১টি ব্যাংক হলো- বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, সিটিজেনস ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, মধুমতি ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, সীমান্ত ব্যাংক, ব্যাংক আল-ফালাহ, সিটি ব্যাংক, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।
এরমধ্যে বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, সিটিজেনস ব্যাংক ও কমিউনিটি ব্যাংক হলো নতুন। এই তিনটি ব্যাংক এখনো উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ঋণ বিতরণ করতে পারেনি। এ কারণে তাদের খেলাপি ঋণের হার সর্বনিম্ন।
কমিউনিটি ব্যাংক ২০১৮ সালে তফসিলি ব্যাংক হিসেবে নিবন্ধন পেয়েছিল এবং বেঙ্গল কমার্শিয়াল ও সিটিজেনস ব্যাংক ২০২০ সালে নিবন্ধন পেয়েছিল।
এদিকে, দেশে কাজ করা বিদেশি ব্যাংকগুলো সুশাসনের মাধ্যমে কম খেলাপি ঋণের হার বজায় রেখেছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে শুধু সোনালী ব্যাংক সম্প্রতি বড় ঋণ বিতরণে ধীরগতির কৌশল অবলম্বন করে খেলাপি ঋণ কমাতে সক্ষম হয়েছে।
সমাপ্ত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ১৩ শতাংশ। এর আগের সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ব্যাংকটির ঋণের হার ছিলো ১৫ দশমিক ৯৯ শতাংশে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ব্যাংকিং খাতে মোট খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। এর আগের প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ ছিলো ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। আর গত বছরের জুনে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ রেকর্ড ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকায় পৌঁছেছিলো।