নিজস্ব প্রতিবেদক: এক ঘণ্টা অবস্থানের পর শাহবাগ মোড় থেকে অবরোধ তুলে নিয়েছেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। পরে ওই এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা। অবরোধ তুলে নেওয়ার আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আগামীকাল নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে জানান সমন্বয়করা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র ঐক্যের অন্যতম সমন্বয়ক আবু বকর মজুমদার বলেন, শনিবার সব বিশ্ববিদ্যালয় ও জেলায় অনলাইন-অফলাইনে প্রতিনিধি বৈঠক হবে। এরপর সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার অনেক জায়গায় আমাদের সহযোদ্ধাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সামনে যদি আমাদের কোনও সহকর্মীর ওপর হামলা হয়, তাহলে এর ফল ভালো হবে না।’ এসময় আন্দোলনকারীদের একদফা আমলে নিয়ে সরকারের প্রতি দ্রুত দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এর আগে বিকাল ৫টা ২০ মিনিটে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে এসে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন তারা। প্রায় এক ঘণ্টা অবস্থান শেষে সন্ধ্যা ৬টা ২৫ মিনিটে তারা শাহবাগ মোড় ছেড়ে যান। এরপর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের তুমুল আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে নবম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং জেলা কোটা ১০ শতাংশ বাতিল করে পরিপত্র জারি করে সরকার। ওই পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাত জন। আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ৫ জুন হাইকোর্ট মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। তবে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
গত ৫ জুন হাইকোর্টের এমন রায়ের পর থেকেই কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন দানা বাঁধতে শুরু করে। পরে ১ জুলাই রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের রায়ের পর ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ মাঠে নামেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা। এক পর্যায়ে গত ৭ জুলাই থেকে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন আন্দোলনকারীরা। মুহূর্তেই সেই আন্দোলন ছড়িয়ে পরে সারা দেশে।