চার বছর পর জোহানেসবার্গে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যকার বৈঠক দুই দেশের রাজনৈতিক সম্পর্ককে উচ্চতর পর্যায়ে উন্নীত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
এ দ্বিপাক্ষিক শক্তিশালী রাজনৈতিক সম্পর্ক ভবিষ্যতে দ্বিপাক্ষিক উন্নয়নের পথনির্দেশক হিসেবে কাজ করবে বলেও জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর রেডিসন ব্লু হোটেলে আয়োজিত ‘চায়না-বাংলাদেশ বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০২৩’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিসিসিসিআই) ও চাইনিজ এন্টারপ্রাইজেস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (সিইএবি) যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকায় চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। তিনি বলেন, দুই দেশ একসঙ্গে সফলভাবে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে চীনের সহায়তাপুষ্ট প্রকল্প বড় ভূমিকা রাখছে। চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য বন্ধু ও বিশ্বস্ত উন্নয়ন অংশীদার। চীনা কোম্পানিগুলোও বাংলাদেশের স্থানীয় ব্যবসায়ীরে সঙ্গে সমন্বিতভাবে এদেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, গত ১৩ বছর ধরে চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। গত তিন প্রান্তিকে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি ১৬ শতাংশ কমেছে। এটি বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে। চীন বাংলাদেশের এফডিআই এর অন্যতম উৎস। বাংলাদেশে বর্তমানে চীনের এফডিআই স্টক ৩.১৭ বিলিয়ন ডলার।
বিসিসিসিআই এর আল মামুন মৃধা বলেন, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশ-চীন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারে শক্তিশালী ভূমিকা রাখছে। অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসের ভিত্তিতেই বাংলাদেশ-চীন বাণিজ্যের পরিমাণ উচ্চস্তরে উন্নীত হয়েছে। চাইনিজ কাস্টমস এর তথ্য অনুযায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ২৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে বিসিসিসিআই নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধিত এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক চেম্বার। ৭০০ এরও বেশি এন্টারপ্রাইজ এই চেম্বারের সদস্য, যার মধ্যে ৫০০ এর বেশি চীনা এন্টারপ্রাইজ রয়েছে। বিসিসিসিআই ও এর সদস্যরা আরও বেশি চীনা বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা এবং বাণিজ্য বাড়াতে কঠোর পরিশ্রম করছে। এজন্য গত কয়েক বছর ধরে বিসিসিসিআই চায়না কাউন্সিল ফর দ্য প্রমোশন অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড (সিসিপিআইটি), বিডা, বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অফিসিয়াল পার্টনার হিসেবে কাজ করছে।
সিইএবির প্রেসিডেন্ট কে চিয়াংলিয়াং বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বিশ্বস্ত উন্নয়ন অংশীদার হতে পেরে চীনা বিনিয়োগকারীরা গর্বিত। আমাদের সদস্য কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে প্রত্যক্ষভাবে ৫ লাখেরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি অঞ্চলে ব্যবসার পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রেও চীনা কোম্পানিগুলো সমানভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে।