নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) গ্র্যাজুয়েশন পিরিয়ড তিন বছর পেছানো না গেলে দেশের অর্থনীতিতে বড় ধস নামবে। এলডিসি উত্তরণের সময় আরও তিন বছর পিছিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন সংগঠনটির সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ।
তিএলডিসি গ্র্যাজুয়েশন পিরিয়ড তিন বছর পেছানো না গেলে দেশের অর্থনীতিতে বড় ধস নামবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)-এর সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। এ সময় বিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রীতি চক্রবর্তীসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বিসিআই সভাপতি বলেন, ব্যবসায়ীরা এই মুহূর্তে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখে। সরকার এবং রাজনীতিবিদরা অর্থনৈতিক চ্যাপ্টারকে গুরুত্ব দিতে ভুলে গেছেন। সরকার অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্যকে গুরুত্ব না দিয়ে শুধু অন্যান্য ইস্যু নিয়ে ব্যস্ত। অথচ অর্থনীতির চাকা না ঘুরতে থাকলে ভবিষ্যতে যারা সরকার গঠন করবে তারা অর্থনীতি সামাল দিতে পারবে না।
২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) কাতার থেকে উত্তরণ হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে পর্যায়ক্রমে রপ্তানি পণ্যে প্রণোদনা হ্রাস করার একটি কৌশলগত পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিসিআই সভাপতি বলেন, গত এক বছরে দেশের ১০০টি গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। আরও ২০০টি কারখানা বন্ধের পথে। অন্যদিকে বর্তমান সরকার ‘টিকফা’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে যেন আমেরিকায় জিএসপি সুবিধা পাওয়া যায় সেজন্য শ্রমআইন বাস্তবায়নে আমেরিকার প্রেসক্রিপশনে কাজ করছে। অথচ আমেরিকা জিএসপি দিলেও সেখানে গার্মেন্টস ও টেক্সটাইলে কখনো ডিউটি ফ্রি অ্যাকসেস পাবে না। আমরা মনে করি, যদি গ্র্যাজুয়েশন পেছানো না যায়, তবে দেশের অর্থনীতিতে বড় ধস নামবে।
তিনি বলেন, এখানে গার্মেন্টস ও টেক্সাটাইল সেক্টর যেটা কৃষির পরে অর্থনীতির লাইফ লাইন, যা শুধু ৪০ শতাংশ কর্মসংস্থান তৈরি করেছে এবং রপ্তানির ৮৫ শতাংশ অবদান রয়েছে যার, সেই সেক্টর বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) কারণে শুধু ইউরোপীয় ইউনিয়নে ভিয়েতনাম ২০২৭ সালে জিরো ট্যারিফ সুবিধা পাবে। আর বাংলাদেশের গার্মেন্টস সেক্টরের ওপর ইউরোপের আমদানিকারকরা ১২ শতাংশ ডিউটি আরোপ করবে, যা ২০২৯ সাল পর্যন্ত দিতে হবে, অন্যান্য দেশেও একই অবস্থা তৈরি হবে। সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন পিরিয়ড তিন বছর পেছানোর দাবি জানাই আমরা।
আনোয়ারুল আলম চৌধুরী বলেন, সরকার আইএমএফের প্রেসক্রিপশন মেনে চলছে। এটা বাস্তবায়নে আমাদের দেশ চলবে না, অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এখানে গণতান্ত্রিক সরকার ছাড়া স্বস্তি ফিরবে না। ব্যবসায়ীরা মনে করেন, যত দ্রুত সম্ভব অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় যাওয়া উচিত।
তিনি বলেন, আবারও সুদহার বাড়ানো হচ্ছে। ভ্যাট বাড়ানো ও ঋণ শ্রেণিকরণের মেয়াদ ৬ মাস থেকে কমিয়ে ৩ মাসে নিয়ে আসার মতো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যখন উপদেষ্টা ও গভর্নরের পক্ষ থেকে বলা হয়, দাম বাড়বে না, শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, আবার ঋণের সুদ-জ্বালানির দাম বাড়ানো হয়। এ ধরনের বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য শিল্প উদ্যোক্তাদের চিন্তায় ফেলে দেয়। এ অবস্থায় যদি দেশি উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ করতে ভয় পান, তাহলে সরাসরি বিদেশি (এফডিআই) বিনিয়োগ কিভাবে আসবে?