নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত রাশিয়ার উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময় বলে মনে করেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি আশরাফ আহমেদ।
মঙ্গলবার (২৮ মে) ডিসিসিআই আয়োজিত “বাংলাদেশ-রাশিয়ার বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা উন্নয়ন” বিষয়ক মতবিনিময় সভায় তিনি এ অভিমত জানান।
ভারতের নিযুক্ত রাশিয়ার ট্রেড কমিশনার ড. আলেক্সন্ডার রায়রাস-এর নেতৃত্বে বাংলাদেশ সফররত ১৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ওই মতবিনিময় সভায় যোগ দেন।
সভার শুরুতে প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে ডিসিসিআই সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, বিগত ১৫ বছরে আমাদের অর্থনীতির আকার প্রায় চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, সেই সঙ্গে বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণ বাস্তবায়নে শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে বিশেষ করে শিল্প খাতে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিতকল্পে আমাদের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত রাশিয়ার উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশের কৃষির আধুনিকায়ন, তথ্য-প্রযুক্তি, শিক্ষা ও সেবা প্রভৃতি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানান। তিনি উল্লেখ করেন, এখন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ৯৬৫ দশমিক ৫১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যেখানে বাংলাদেশের আমদানি-রফতানির পরিমাণ যথাক্রমে ৫০৫ দশমিক ২২ এবং ৪৬০ দশমিক ৩৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, পাশাপাশি ইতোমধ্যে রাশিয়ার উদ্যোক্তারা বাংলাদেশে বিভিন্ন শিল্প খাতে ১৭ দশমিক ২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ করেছে। বাংলাদেশে তৈরি পোশাক, ঔষধ, পাট ও পাটজাত পণ্য, হালকা-প্রকৌশল, প্লাস্টিক পণ্য, জুতা, সিরামিক এবং আইটি ও আইটিএস প্রভৃতি পণ্য বেশি হারে আমদানির জন্য রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানান ঢাকা চেম্বার সভাপতি।
ড. আলেক্সন্ডার রায়রাস বলেন, দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের এবং ১৯৭২ সালে দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্যচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে রাশিয়া ইতোমধ্যে এগিয়ে এসেছে এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা ও প্রাকৃতিক গ্যাস অনুসন্ধানে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। তিনি জানান, ২০২৩ সালে রাশিয়া প্রায় ২ দশমিক ৬৭ মিলিয়ন মেট্রিকটন গম বাংলাদেশে রফতানি করেছে। বাংলাদেশের তথ্য-প্রযুক্তি, ব্যাংকিং, কেমিক্যাল এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে রাশিয়ার একক ও যৌথ বিনিয়োগের প্রচুর সুযোগ রয়েছে বলে, তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি আরও বলেন, জাহাজ নির্মাণ শিল্পে বাংলাদেশের দক্ষ কর্মী বাহিনী ২০২৩ সাল থেকে রাশিয়ার এ শিল্পে নিয়োজিত রয়েছে এবং আশা প্রকাশ করেন ভবিষ্যতে তা আরও বাড়ানো হবে।
বাংলাদেশে রাশিয়ার দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন ইকাটেরিনা সিমিনোভা বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের সঙ্গে রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও জোরদার করতে তিনি দেশ দুটোর বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের মধ্যকার সম্পর্ক সম্প্রসারণের উপর গুরুত্বারোপ করেন।