নিজস্ব প্রতিবেদক: আমি এক কোটি গরিব মানুষকে একটা ব্যাংকের মালিক বানিয়েছি। বৃহস্পতিবার (২ মে) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এ জামিন শুনানি শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
ড. ইউনূস বলেন, ‘আজকে দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে এখানে উপস্থিত হয়েছি। দুর্নীতি দমন কমিশন আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে দুর্নীতির। আমি জালিয়াতি করেছি, অর্থ আত্মসাৎ করেছি, অর্থ পাচার করেছি- এ রকম বহু ভয়াবহ শব্দ আমার অপরাধ হিসেবে বলা হয়েছে।’
গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা আমাকে বহুদিন থেকে চিনছেন, এ অপরাধগুলো আমার গায়ে লাগানোর মতো অপরাধ কি না আপনারাই বিবেচনা করবেন। আগে যে রকম আপনারা বিবেচনা করেছেন। আমাকে বলা হয়েছে, আমি সুদখোর, বহুবার বলা হয়েছে। আপনারা সেটা গ্রহণ করেন নাই। কারণ গ্রামীণ ব্যাংকের মালিক আমি না। সুদ যদি গ্রহণ করে থাকে, সেই গ্রামীণ ব্যাংকের মালিকেরাই গ্রহণ করেছে।’
তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক থেকে আমাকে যখন বের করে দেওয়া হয়, তখন গ্রামীণ ব্যাংকের ৯৭ শতাংশ মালিকানা আমাদের সদস্যদের কাছে ছিল। সুদ যদি গ্রহণ করে থাকেন, তারাই গ্রহণ করেছেন। আমি একজন কর্মচারী মাত্র, সেটা আপনারা জানতেন। আমি গ্রামীণ ব্যাংকের মালিক ছিলাম না কখনো। কাজেই আপনারা (গণমাধ্যম) সেটা গ্রহণ করেননি কখনো।
‘আমাকে বলা হয়েছে, আমি গরিবের রক্তচোষা। সেটাও আপনারা গ্রহণ করেননি। রক্ত চুষতে হলে যেটা করতে হয়, সে রকম কাজ আমি করি নাই—আপনারা দেখেছেন। আমি এক কোটি গরিব মানুষকে একটা ব্যাংকের মালিক বানিয়েছি। তাদেরকে মালিকানা দিয়েছি, আর কেউ তো দেয় নাই এ পর্যন্ত। এটা তো সত্যি ঘটনা। এখনো আছে তারা মালিক। বলা হয়েছে, আমি পদ্মা সেতু বানচাল করে দিয়েছি, বিশ্ব ব্যাংকের টাকা বন্ধ করে দিয়েছি; আমাকে পদ্মা নদীতে চুবানো দরকার—বহুবার বলা হয়েছে। বড় বড় অনুষ্ঠানে বলা হয়েছে। আপনারা সেটা গ্রহণ করেন নাই,’ যোগ করেন তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, ‘আজকে যে অভিযোগ এনেছে, সেগুলো একই নিয়মের, একই কাহিনীর অন্তর্ভুক্ত। কাজেই আপনাদের বিবেচনার ওপর আমি ছেড়ে দিলাম। আজকে যে অভিযোগ, জোচ্চুরি, অর্থ আত্মসাৎ, অর্থ পাচার-এগুলো সত্য কি না? নাকি সুদখোরের মতো কথা বার্তা, সেটা আপনাদের বিচারের জন্য ছেড়ে দিলাম। আমি আপনাদের বিবেচনায় বিশ্বাসী, সেভাবেই আমি আপনাদের কাছ থেকে আশা করব।’