যশোর জেলা প্রতিনিধি: সারা দেশের মতো যশোরেও বেড়েছে শীতের তীব্রতা। একইসঙ্গে বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগ। এ রোগে আক্রান্ত রোগীদের বেশির ভাগই শিশু। ধারণক্ষমতার তিনগুণ শিশু রোগী নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে যশোর জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শিশুদের মধ্যে অধিকাংশই জ্বর, সর্দি ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত।
রোববার সরেজমিনে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, ২০টি বেডের বিপরীতে বর্তমানে শিশু রোগী ভর্তি আছে ৫৫ জন। এর মধ্যে ১২টি শিশু নিউমোনিয়া, ৭টি নিওনেটাল এবং বাকি ৩৬টি শিশু সর্দি-কাশি, ব্রঙ্কাইটিস ও অ্যাজমাসহ বিভিন্ন শীতকালীন রোগে আক্রান্ত। শিশুদের পাশাপাশি বয়স্করাও ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এদিকে শিশু ওয়ার্ডের পরিসংখ্যান অনুযায়ী আক্রান্তদের মধ্যে শূন্য থেকে ৫ বছর বয়সী শিশু এবং ৫০ ঊর্ধ্ব বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বেশি। এছাড়া শিশু ওয়ার্ডের পাশাপাশি হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডেও ভর্তি রোগীরা ক্লোল্ড ডায়রিয়ার চিকিৎসা নিচ্ছেন।
তিন মাস বয়সী আফিয়া সুলতানা। যশোর সদর উপজেলার তপশীডাঙ্গা থেকে তিনদিন আগে হাসপাতালে আনা হয় তাকে। শিশুটির অভিভাবক মাইশা সুলতানা বলেন, আমাদের হঠাৎ ঠান্ডা লেগে অসুস্থ হয়ে পড়েছে সে। এখন একটু সুস্থ। শীত বেড়ে যাওয়ায় হঠাৎ এমন হয়েছে হয়তো।
সদর উপজেলার বাহাদুরপুর পূর্বপাড়া গ্রামের একরাম হোসেনের চার বছর বয়সী শিশু কন্যা তাসলিমার শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিয়েছে। ২দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একরাম হোসেন বলেন, মেয়ের হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। হাসপাতালে আনার পর ডাক্তার বললো ঠান্ডা লেগে এমনটা হয়েছে।
হাসপাতালের চতুর্থ তলার শিশু ওয়ার্ড রোগীতে পরিপূর্ণ। বর্তমানে যারা ভর্তি আছে তাদের বেশিরভাগই ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছে।
হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আব্দুস সামাদ জানান, হঠাৎ করে যশোরে শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার কারণে ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে নবজাতক ও শিশুরা। তাই অভিভাবকদের জন্য পরামর্শ, শিশুদের হালকা গরম পানি দিয়ে শরীর মুছিয়ে দিন এবং পুষ্টিকর তরল জাতীয় খাবার খাওয়ান।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার পার্থ প্রতিম চক্রবর্তী বলেন, শীত বাড়ার সাথে সাথে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে গেছে। বিভিন্ন বয়সের রোগী প্রতিদিন আউটডোরে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার হারুন অর রশিদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, হাসপাতালের ধারণক্ষমতার বেশি রোগী সেবা দিতে বাধ্য হচ্ছি। এর মধ্যে শীতে রোগী বেড়ে যাওয়ায় সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও সেবিকারা। তারপরও সুষ্ঠুভাবে সেবা প্রদান করে যাচ্ছেন ওয়ার্ডে কর্তব্যরতরা।
তিনি বলেন, এ সময় ঠান্ডাজনিত রোগ বেড়ে যায়। তাই অভিভাবকদের সতর্ক থাকতে হবে। প্রয়োজনে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।