নিজস্ব প্রতিবেদক: মেলা শুরুর পরে প্রথম ছুটির দিনে জমে উঠেছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় সকাল থেকেই ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে শুরু করেছে দর্শনার্থীর সংখ্যাও।
মেলায় ক্রেতা দর্শনার্থী বাড়ায় খুশি আয়োজক ও ব্যবসায়ীরা। তবে মাসের শেষ শুক্রবার না হলে ক্রেতাদের চাপ আরও বাড়তো বলে মনে করছেন তারা।
মেলায় হোম টেক্সের কর্ণধার ফিরোজ আহমেদ বলেন, গত শনিবার মেলা শুরুর পর থেকে আজ ক্রেতা সবচেয়ে বেশি। তবে মাসের শেষ, মানুষের হাতে টাকা নেই তাই বেচাবিক্রি এখনো খুব বেশি জমেনি।
অন্যান্য স্টল মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুরু হওয়া এই মেলায় এতদিনে তেমন কোনো ক্রেতা-দর্শনার্থী দেখা যায়নি। তবে আজ ছুটির দিনে দর্শনার্থী অনেক বেশি। বিক্রিও বেড়েছে। আগামী মাসের শুরু থেকে মেলা জমে উঠছে বলে জানান বিক্রেতারা।
সরেজমিনে, অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ শুক্রবার সকাল থেকেই ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। স্টল-প্যাভিলিয়নগুলোতে ভিড়ের চেয়ে প্রাঙ্গণজুড়ে তাদের পদচারণা বেশি। এ সময় বিক্রেতাদেরও ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে।
মেলায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরতে এসেছেন বাড্ডা থেকে জিহাদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ছুটির দিন তাই পরিবারের সবাইকে নিয়ে চলে এলাম। মেলা ঘুরে বিভিন্ন পণ্য দেখছি। পছন্দ হলেই কিনব।
মেলায় আরএফএলসহ বিভিন্ন দেশি-বিদেশি প্যাভিলিয়নগুলোতে ভিড় ছিল লক্ষ্যনীয়। মেলা উপলক্ষে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দিচ্ছে নানা ধরনের ছাড় ও উপহার।
আরএফএল প্যাভিলিয়ন ইনচার্জ আজিজুর রহমান আজিজ বলেন, পণ্যভেদে আমরা ১০ থেকে ৩০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছি মেলা উপলক্ষে। এছাড়া বাই ওয়ান গেট ওয়ান অফার হয়েছে কিছু পণ্যে। পাশাপাশি হোম ডেলিভারি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে মেলায় বিভিন্ন পণ্যের দাম নিয়ে ক্রেতাদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নন ব্র্যান্ডের কিছু কিছু দোকানে পণ্যের দাম স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি রাখা হচ্ছে। অন্যদিকে কিছু দোকানে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কিছুটা কম মূল্যেও ভালো জিনিস পাওয়া যাচ্ছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো যৌথভাবে মেলার আয়োজন করছে। সাধারণত ১ জানুয়ারি থেকে মেলা শুরু হলেও এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্ধারিত সময়ের পর মেলা শুরু হয়েছে।
আয়োজক–সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত বছর দেশি–বিদেশি মিলিয়ে ৩৩১টি স্টল মেলায় অংশ নেয়। এ বছর সব মিলিয়ে ৩৫০টি স্টল অংশ নেবে। দেশীয় উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি সিঙ্গাপুর, তুরস্ক, হংকং, ইরান, ভারত, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে অংশ নেওয়া ব্যবসায়ীরা মেলায় নিজেদের পণ্য বিক্রি করবেন। গত বছরের তুলনায় এ বছর মেলায় প্রবেশমূল্যও বেড়েছে। এ বছর সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য ৫০ টাকা ও ১২ বছরের কম বয়সীদের জন্য ২৫ টাকা টিকিটের মূল্য ধরা হয়েছে। গত বছর যা ছিল যথাক্রমে ৪০ ও ২০ টাকা।
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে। ছুটির দিন মেলা চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত। মেলায় দর্শনার্থীদের যাতায়াতের জন্য রাজধানীর ফার্মগেট ও কুড়িল বিশ্বরোড থেকে আলাদা বাস ছাড়বে। মেলায় আসতে ফার্মগেট থেকে ৭০ টাকা ও কুড়িল থেকে ৩৫ টাকা মূল্যের টিকিট কাটতে হবে দর্শনার্থীদের।