জনতা ব্যাংককে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। বর্তমানে খেলাপী ঋণ আদায় ও আমানত বৃদ্ধিতে জোর দিয়ে কাজ করছে ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে জনতা ব্যাংক একটি অন্যতম ব্যাংক। বেশ কিছু খেলাপীর কারণে ব্যাংকটি একটু নাজুক অবস্থায় রয়েছে। তবে খুব শিগগিরই আবার আগের ঐতিহ্যে ফিরে আসবে জনতা ব্যাংক। সেই লক্ষেই কাজ করছি। জনতা ব্যাংক পিএলসির বিদ্যমান ব্যাংকিংসেবার মান উন্নয়ন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ব্যাংকটির এমডি মো. মজিবর রহমান এসব কথা বলেন।
এমডি মো. মজিবর রহমান বলেন, ২০২৫ সালের জন্য ঘোষিত বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা শতভাগ অর্জনের লক্ষ্যে আগামী রোববার ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে ১০০ দিনের বিশেষ কর্মসূচি উদ্বোধন করা হবে। সেখানে ১০০ দিনের কর্মসূচির লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে কর্মীদের অবদান মূল্যায়ন করা হবে। ভিন্ন ক্যাটাগরিতে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য সেরা কর্মী পুরস্কার প্রদান করা হবে।
তিনি জানান, এই কর্মসূচির মাধ্যমে ব্যাংকের রেমিট্যান্স আহরণ ও আমানতের প্রবৃদ্ধি, রপ্তানি বাণিজ্য, গ্রিন ব্যাংকিং, খেলাপি ঋণ আদায় বৃদ্ধি পাবে। বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি বাস্তবায়নসহ অন্যান্য সূচকে আরো অগ্রগতি লাভ করবে ব্যাংক। সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে হবে দেশের অন্যতম ব্যাংক।
এমডি মো. মজিবর রহমান বলেন, আমানত বৃদ্ধিতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এরমধ্যে নতুন প্রজন্মকে মাথায় রেখে ‘নতুন প্রজন্ম দ্বিগুন মুনাফা স্কীম’ নামে একটি ডিপোজিট চালু করা হয়েছে। সেই হিসাবের মেয়াদকাল ৬ বছর ৬ মাস । যাদের সর্বনিম্ন এক লক্ষ টাকা অথবা তার গুণিতক পরিমাণ জমা করে হিসাবটি খোলা যাবে। মুনাফার হার হবে ১১.২৩ শতাংশ। হিসাবের বিপরীতে ঋণ সুবিধা পাওয়া যাবে। এক নামে একাধিক অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে। নাবালকের নামে অভিভাবকের পরিচালনায় হিসাবটি খোলা যাবে।
এছাড়া ‘জনতা ব্যাংক স্মার্ট একাউন্ট’ নামে একটি ডিপোজিট রয়েছে। সেখানেও রয়েছে বিশেষ সুবিধা। প্রাথমিকভাবে মাত্র দুই হাজার টাকা জমা দিয়ে এ হিসাব খোলা যাবে। কিস্তির পরিমাণ ও সংখ্যা যেকোনো পরিমাণ টাকা মাসের যেকোনো কর্মদিবসে যত খুশি ততবার জমা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। কোনো মাসে টাকা জমা না দিলেও হিসাব বন্ধ হওয়ার ঝুঁকি নেই। জমা টাকার উপরে দৈনিক ভিত্তিতে মুনাফার হিসাবায়ন। মেয়াদ ৩ বছর ৫ বছর ৭ বছর ও ১০ বছর। যখন খুশি তখন জমা, যেমন ইচ্ছা তেমন জমা। সুদের হার, স্থায়ী আমানত। অপেক্ষা বেশি হবে।
তিনি আরো বলেন, ‘জনতা ব্যাংক ডিপোজিট পেনশন স্কীম’ নামে একটি ডিপোজিট রয়েছে। হিসাবের মেয়াদকাল পাঁচ ও দশ বছর। মাসিক কিস্তির পরিমাণ পাঁচশত টাকা থেকে যতো ইচ্ছ জমা দেয়া যাবে। মুনাফার হার ১০ শতাংশ। প্রতি মাসের যেকোনো তারিখে সেই মাসের কিস্তি জমা করা যাবে। মাসিক কিস্তির টাকা নগদ, ই-জনতা অ্যাপ, অনলাইন ব্যাংকিং এর মাধ্যমে জমা করা যাবে। হিসাবের বিপরীতে ঋণ সুবিধা পাওয়া যাবে । এক নামে একাধিক অ্যাকাউন্ড খোলা যাবে।
এমডি মো. মজিবর রহমান বলেন, ‘জেবি আমার সঞ্চয় আমার মুনাফা স্কীম নামে আরো একটি ডিপোজিট রয়েছে। যার ন্যূনতম ১ লক্ষ টাকা ও তার গুণিতক তদুর্ধ্ব যেকোনো পরিমাণ টাকা জমা রেখে সঞ্চয়পত্রের মতোই মাসিক হারে মুনাফা গ্রহণ করা যাবে। যেকোনো কর্মদিবসে হিসাব খোলার সুবিধা । মুনাফার অর্থ মাসিক ভিত্তিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সঞ্চয়/চলতি হিসাবে জমা হবে। মুনাফার অর্থ জনতা ব্যাংকের যেকোনো শাখায় জমার সুবিধা। ৩ বছর মেয়াদীর ক্ষেত্রে মুনাফা প্রতি লাখে মাসিক ৮১০ টাকা। ৫ বছর মেয়াদীর ক্ষেত্রে মুনাফা প্রতি লাখে মাসিক ৮৩৩ টাকা। যার আয়কর সনদ বাধ্যতামূলক নয়।