অর্থনৈতিক প্রতিবেদক: ব্যাংকে স্থিতিশীলতা ও সুশাসন এবং জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে। নতুন পর্ষদ এই বছরের মধ্যে ব্যাংকটিকে পুরোদমে ঘুরে দাঁড়াতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন এসআইবিএলের ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ নাজমুস সায়াদাত।
তিনি বলেন, ২০১৭ সালে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের মালিকানায় পরিবর্তন আসে। মালিকানা নেন এস আলম গ্রুপ। এস আলম মালিকানা নেয়ার পরে বেশ কিছু অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে ব্যাংকটিতে। গত ৫ই আগস্টের পরে দেশের রাজনীতিতে এক ধরনের পরিবর্তন আসে। সে পরিবর্তনের ছোঁয়া ব্যাংক খাতেও লাগে। বাংলাদেশ ব্যাংক যখন এসব ব্যাংকগুলোকে পুনর্গঠন করলেন ব্যাংকের পর্ষদকে পুনর্গঠন করলেন। বাংলাদেশ ব্যাংক আগে যেমন আমাদেরকে সাপোর্ট দিতেন, সেই সাপোর্টগুলো পরবর্তীতে বন্ধ করে দেন। ফলে ব্যাংকে আমানতের সংকট দেখা দিল। একই সাথে ও গ্রাহকদের মধ্যেও এক ধরনের অনাস্থা দেখা দিল। সুতরাং টাকা উত্তোলনের চাপটা বেড়ে গেল। গ্রাহক একসাথে যদি টাকা তুলতে আসে তাহলে কোন ব্যাংকেরই সম্ভব নয় সেই চাপ সামাল দেওয়া। আর এসব সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে একমাত্র গ্রাহকের আস্থার সংকট থেকে। তাই আমরা চেষ্টা করছি ব্যাংকের পুরোনো ঐতিহ্যে ফিরিয়ে আনা য়ায়।
তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাপোর্টের মাধ্যমে অন্য ব্যাংক থেকে আমরা কিছু সহযোগিতা নিয়েছি। আমরা সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার পেয়েছি। এর অর্থ দিয়ে আমরা গ্রাহকের টাকা ফেরত দেওয়ার চেষ্টা করেছি। পরবর্তীতে গ্রাহক আস্থা ফিরে পায়।
মোঃ নাজমুস সায়াদাত বলেন, , ঋণ আদায় বেশি জোর দিয়েছি আমরা। বর্তমানে গ্রাহকের আস্থা কিছুটা হলেও ফেরাতে সক্ষম হয়েছে। ঋণ আদায়ের পাশাপাশি কিছু আমানত আমানত আনতেও সক্ষম হয়েছে। একইসঙ্গে বন্ধ থাকা ইউটিলিটি বিল বকেয়া পেমেন্ট করে পুনরায় চালু করেছি। আমাদের বড় ধরনের ইউটিলিটি বিল কালেকশন হয়। এখান থেকে আমাদের লিকুডিটি সাপোর্টে কাজ করে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সাপোর্ট পাওয়ার পরে ফরেন পেমেন্ট এলসি আমরা পুরোটাই পরিশোধ করেছি।
তিনি বলেন, বেশ কিছু পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এরমধ্যে রিকভারি ও ওভারডিও থেকে আদায় বাড়ানোর পাশাপাশি নগদ আয় বাড়ানোর প্রতি বেশি জোর দেয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের বিল সংগ্রহের হিসাবগুলো, যেমন, ডেসকো, তিতাস, পল্লী বিদ্যুৎ, ওয়াসা, বিটিসিএল, বিআরটিএ, ডিপিডিসি, বাখরাবাদ, কর্ণফুলীসহ আরো বেশকিছুর প্রতিষ্ঠানের সেবা প্রদানের মাধ্যমে নগদ আয় বৃদ্ধি করা হচ্ছে। যা আমাদের তারল্য সংকট কাটতে সহায়তা করবে। এছাড়া আরো বেশ কিছু কার্যক্রম হাতে নিয়েছি যার মাধ্যমে এবছরের মধ্যে স্যোশাল ইসলামী ব্যাংক পুরোদমে ঘুরে দাঁড়াবে। ইন্নশাল্লাহ।
তিনি আরো বলেন, ব্যাংকটিতে সুশাসন ফিরাতে সকল ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সকল গ্রাহকের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ভালো ও মন্দ কেউকে বাদ দেয়া হচ্ছে না। ভালো ও মন্দ সবাই আমাদের গ্রাহক। সবাইকে বলছি নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করতে। যারা নিয়মিত দেয় না, তারাও অনেকই আশ্বাস দিয়েছে ঋণ পরিশোধ করবে। তবে যারা টাকা দিবে না তাদের ব্যাপারেও আমরা কঠোর। তাদের ব্যাপারে সকল ধরণের আইনগত ব্যাবস্থা নিতেও আমরা পিছু হটবো না। এ ছাড়া ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং ক্ষেত্রভেদে তাদের নামে নতুন মামলা দেওয়া। এছাড়া চব্বিশ ঘণ্টা এটিএম সার্ভিস ও রিয়েল টাইম অন-লাইন ব্যাংকিং চালু রয়েছে। বৈদেশিক রেমিটেন্স সেবার জন্য বিশ্বের বিখ্যাত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রেমিট্যান্স কোম্পানীর সাথে আমাদের চুক্তি রয়েছে।